ডাবের পানির ১০ টি উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে আলোচনা।

আমাদের দেশে বিভিন্ন ধরনের ফল রয়েছে তার মধ্যে একটি হলো ডাব। এই ডাব ফলটি আমাদের দেশের যেকোন মৌসুমেই দেখতে পাওয়া যায়। আপনি এই ফলটি যেকোনো মৌসুমে খেতে পারেন। যাদের শরীরে ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়ামের ঘাটতি রয়েছে তাদেরকে ডাক্তাররা ডাবের পানি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকে। আজকে আমরা আমাদের আর্টিকেলে ডাবের পানির উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করব।
ডাবের পানি


আমরা আজকের এই আর্টিকেলে ডাবের পানির উপকারিতা ও অপকারিতা সহ আরো বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। তাই আপনারা আমাদের আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ার জন্য অনুরোধ রইল। তা না হলে আপনারা বিশেষ কিছু জিনিস না জানা থেকে যেতে পারে।

যে কারনে ডাব খাওয়া জরুরি

ডাব এমন একটি ফল যা আমাদের বাইরের সৌন্দর্যের পাশাপাশি আমাদের দেহের ভেতরেরও যত্নে একটি উপকারী ফল। আমাদের শরীরের বাইরে ও ভেতরে দুই অংশ সতেজ রাখতে ডাবের পানি একটি অপরিহার্য উপাদান। আমরা যে কারণে ডাবের পানি পান করব তা নিচে লিখা হলোঃ
  • আমরা যদি নিয়মিত ডাবের পানি পান করি তাহলে এটি আমাদের হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। যার ফলে আমরা যারা ডায়েট কন্ট্রোল করতে চাই তারা চাইলে প্রতিদিন ডাবের পানি খেতে পারেন।
  • ডাবের পানি পান করলে আমাদের পেট পরিষ্কার থাকে। সাথে এটি আমাদের ত্বকের ব্রণ বা কালো দাগ দূর করে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
  • আরও রয়েছে ডাবের পানিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ এবং সি, যা আমাদের ত্বকের জন্য খুবই উপকারী এবং পাশাপাশি এটি আমাদের চুলের গোড়া মজবুত করে।
  • নিয়মিত ডাবের পানি পান করলে এটি আমাদের তক্কে করে উজ্জ্বল, চোখের কালো দাগ দূর করে এবং আমাদের ত্বকের ব্রণ সমস্যা থেকে রক্ষা করে।
  • ডাবের পানি আমাদের শরীরের রক্তশূন্যতা সহ শরীরের ক্লান্তি দূর করে।
  • ডাবের পানি আমাদের বিভিন্ন রোগ যেমনঃ পাতলা পায়খানা, বমি, এবং শরীরের ক্লান্তি দূর করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
তাই আমরা চাইলে নিয়মিত ডাবের পানি সঠিক নিয়মে পান করতে পারি। তাহলে উপরের সমস্যাগুলো থেকে বাঁচতে পারব।

ডাবের পানির উপকারিতা

ডাব হচ্ছে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে একটি পরিচিত ফল। ডাব আমাদের বিভিন্ন কাজে লাগে। ডাবের পানি নিয়মিত খেলে কিডনি রোগ থেকে দূরে রাখে।ডাবের পানি আমাদের দেহে ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়াম এর ঘাটতি পূরণ করে থাকে। যাদের ডায়রিয়া বা কলেরা রোগ ঘনঘন দেখা যায় ডাক্তাররা তাদেরকে নিয়মিত ডাবের পানি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। নিচে ডাবের পানির উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হলোঃ
ডাবের পানির উপকারিতা ও অপকারিতা


  • প্রথমত আমরা যদি নিয়মিত ডাবের পানি পান করি তাহলে আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্য রোগের মত আরও বিভিন্ন রোগ থেকে রেহাই পেতে পারি।
  • এই ডাবের পানি আমাদের কিডনিতে পাথর প্রতিরোধ করতে বিশেষ উপকারে আসে।
  • ডাবের পানি পান করলে শরীরের পানির অভাব দূর করে এবং ভিটামিন সি এর প্রভাব বিস্তার করে।
  • ডাবের পানি আমাদের দেহের গ্লুকজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখতে সহায়তা করে থাকে।
  • ডাবের পানি আমাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াই এবং ত্বকের কালো দাগ দূর করতে সাহায্য করে।
  • ডাবের পানি পান করলে আমাদের হজমের যে সমস্যা তা দূর করতে বিশেষভাবে কাজ করে।
  • ডাবের পানি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বিশেষ উপকারে আসে কারণ ডাবের পানি ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তের শর্করার হার কমাতে বিশেষ সহায়তা করে থাকে।
  • ডাবের পানি মানব দেহের হৃদপিণ্ডকে সুস্থ সবল রাখতে সাহায্য করে। সাথে ডাবের পানি হৃদরোগ থেকে বাঁচতে বিশেষভাবে সহায়তা করে থাকে।
  • ডাবের পানি গর্ভাবস্থায় মায়েদের জন্য খুবই উপকারী একটি খাওয়ার। যেটা গর্ভবতী মা ও শিশু দুজনের জন্যই খুবই উপকারী।
তাই বলা যায় ডাবের পানি আমাদের দেহের জন্য খুবই উপকারী একটি ফল। এটা আমাদের বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে পাশাপাশি এটি আমাদের ক্যালসিয়াম পটাশিয়াম সহ বিভিন্ন ভিটামিন এর অভাব দূর করে। তাই আমরা চাইলে নিয়মিত ডাবের পানি পান করতে পারি।

ডাবের পানির আপকারিতা

ডাবের পানির যেমন উপকারিতাও রয়েছে তেমনি এর কিছু  রয়েছে যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। সকল কিছুরই যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি সেটার কিছু অপকারিতা রয়েছে।ডাবের পানি কখন আমাদের জন্য উপকারিতা হয়ে ওঠে চলুন সেই বিষয়ে জেনে নেওয়া যাক। নিচের ডাবের পানির অপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হলোঃ
  • গরমের সময় যেমন ডাবের পানির চাহিদা বেশি তেমনি কেউ যদি ঠান্ডা, এলার্জি, সর্দি ও কাশিতা আক্রান্ত হয় তবে তার জন্য ডাবের পানি পান করাটা একদমই নিরাপদ হবে না। কারণ এতে আপনার শরীরের জটিলতা বৃদ্ধি পেতে পারে।
  • ডাবের পানি আমাদের কিডনিকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে কিন্তু যদি কেউ কিডনি রোগে আক্রান্ত হন তাহলে তার জন্য ডাবের পানি পান করা মোটেও সঠিক না। কারণ কিডনি রোগের আক্রান্ত ব্যক্তিরা ডাবের পানি পান করলে দেহে পটাশিয়ামের মাত্রা বৃদ্ধি করে ফলে রক্ত চলাচলে জমাট বাঁধতে পারে। ফলে রোগী মারাও যেতে পারে।
  • আমরা কখনোই অতিমাত্রায় ডাবের পানি পান করব না এতে শরীরে পটাশিয়াম এর পরিমাণ বৃদ্ধি পায় এবং কিডনি ও হৃদপিণ্ড অকেজ হয়ে যেতে পারে।
  • ডাবের পানিতে রয়েছে সোডিয়াম। তাই অতিমাত্রায় ডাবের পানি পান করলে এটি আমাদের শরীরের রক্তের চাপ বাড়িয়ে দিতে পারে।
  • ডাবের পানি যদি অতিমাত্রায় খাওয়া যায় তাহলে আমাদের শরীরের ডায়রিয়া হয়ে যেতে পারে।
আমরা যদি উক্ত বিষয়গুলো খেয়াল করি তাহলে বুঝতে পারবো তাদের পানি আমাদের জন্য কখন ক্ষতিকর হবে। তাই আমরা সকলেই চেষ্টা করব উপরিউক্ত বিষয়গুলো মেনে চলার এবং সঠিক নিয়মে ডাবের পানি পান করা।

পাতলা পায়খানা হলে ডাবের পানি খাওয়া যাবে কি?

ডাব এমন একটি ফল যা আমাদের ডায়রিয়া, কলেরা ও যাদের ঘনঘন পাতলা পায়খানা হয় তাদের জন্য বিশেষ উপকারে একটি খাবার। আমরা জানি যে, আমরা যখন পাতলা পায়খানা বা বমি করে থাকি তখন আমাদের শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে পানি এবং খনিজ পদার্থের ঘাটতি হয়ে থাকে। ডাবের পানি খেলে আমাদের এই পানি ও খনিজের ঘাটতি দূর করে থাকে।

 আমাদের যখন ডেঙ্গু জ্বর কিংবা পাতলা পায়খানা হয় তখন আমরা ডাবের পানি পান করে থাকি। কেননা ডাবের পানিতে রয়েছে অধিক পরিমাণে পটাশিয়াম যা আমাদের দেহের পটাশিয়ামের ঘাটতি দূর করে দেয়। ডাবের পানি এমন একটি হল যা আমাদের পাতলা পায়খানা নিয়ন্ত্রণে আনতে বিশেষভাবে সাহায্য করে থাকে।

তাই আমাদের পাতলা পায়খানা দেখা দিলে আমরা অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত ডাবের পানি খাওয়ার চেষ্টা করব। এতে আমাদের নানা রকম রোগ বালাই থেকে রক্ষার পাশাপাশি আমাদের দেহের বিভিন্ন ধরনের ভিটামিনের অভাব দূর করে দিবে।

গর্ভাবস্থায় ডাবের পানির উপকারিতা

ডাক্তাররা গবেষণা করে দেখেছেন যে, ডাবের পানি পান করলে শিশুদের মন মস্তিষ্ক ভালো থাকে। তাই গর্ভাবস্থায় থাকা মায়েদের জন্য ডাবের পানি পান করা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। মহিলারা যখন গর্ভবতী হয় তখন তারা নিজেদের ও সন্তানের দুজনেরই স্বার্থের খেয়াল ও মনোযোগী হতে হয়। এর ফলে তারা খাওয়া দাওয়া বিষয় নিয়ে অনেকটা সচেতন থাকে। 
গর্ভাবস্থায় ডাবের পানির উপকারিতা


গর্ভবতী মায়েরা চাই যে তাদের পেটে থাকা সন্তান যেন সঠিক পরিমাণে পুষ্টি কর খাবার পৌঁচায়। তাই গর্ভাবস্থায়  মহিলাদের জন্য ডাবের পানি খুবই উপকারী একটি খাবার। কেননা ডাবের পানিতে রয়েছে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও ক্লোরাইড। ডাক্তাররা বলেছেন গর্ভবতী মহিলাদের গর্ভধারণের তিন মাস পর থেকেই ডাবের পানি পান করা উচিত। 

এতে মা ও শিশু দুজনেরই পুষ্টি সমৃদ্ধ হয়। যেহেতু ডাবের পানি শিশুদের মস্তিষ্ক ভালো রাখে সেহেতু গর্ব অবস্থায় থাকা মা ও শিশু দুজনের জন্যই ডাবের পানি ভালো কাজ করে। ডাবের পানি পান করার ফলে গর্ভবতী মহিলাদের নানারকম সমস্যা থেকে রক্ষা করে।

তাই বলা যায় ডাবের পানি গর্ভবতী মহিলাদের জন্য খুবই উপকারী একটি খাবার। যেটা তাদের শরীর ও তার শিশুর জন্য খুবই উপকারী।

শেষ কথা বা লেখকের মন্তব্য

প্রিয় পাঠক, আজকে আমরা এই আর্টিকেলের মধ্যে ডাবের পানির উপকারিতা ও অপকারিতা সহ আরও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। আপনারা নিশ্চয়ই এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে বুঝতে পেরেছেন ডাবের পানি গুরুত্ব আমাদের জন্য কতটুকু। তবে হ্যাঁ এর মধ্যে কিছুটা অপকারিতা রইল এর উপকারিতা প্রচুর পরিমাণে রয়েছে। 

এতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান সহ বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন। আশা করি আপনারা আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে ডাবের পানির উপকার ও অপকার সম্পর্কে সচেতন হয়েছেন।

এরকম আরো নিত্য নতুন আর্টিকেল পড়ার জন্য আমাদের সাথে থাকুন এবং সাপোর্ট করুন। ধন্যবাদ!




এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url