কাঠ বাদাম ও কিসমিস খাওয়ার ১৫ টি উপকারিতা নিয়ে আলোচনা।
কাঠবাদাম ও কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা এই সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই অনেক কিছুই অজানা। আপনারা নিশ্চয়ই কাঠবাদাম ও কিসমিস খাবার উপকারিতা সম্পর্কে জানার জন্যই আজকের এই পোস্টটিতে এসেছেন। কারণ কাঠ বাদাম ও কিসমিসের মধ্যে রয়েছে নানান রকম উপকারিতা। তাহলে চলুন আজকের এই পোস্টটিতে আপনাদের কাঠবাদাম ও কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব।
আজকের এই আর্টিকেলটিতে কাঠবাদাম ও কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা সহ আরো বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করা হবে। তাই আপনারা এই আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন তাহলে সেই সকল বিষয় সম্পর্কে জানতে পারবেন।
কাঠ বাদাম ও কাজু বাদাম খাওয়ার উপকারিতা
সাধারণত কাজুবাদাম ও কাঠু বাদাম এই দুটোই বাদাম গোষ্ঠীর অন্তর্গত। তাই এদের থেকে প্রাপ্ত উপকারিতা গুলো মোটামুটি একই ধরনের। এজন্য আমাদের কমবেশি সকলেরই কাঠবাদাম ও কাজুবাদাম একটি পছন্দের খাবার। এটি খেতেও বেশ সুস্বাদু। তাই আমাদের সবারই এই খাবারটি পছন্দের। কিন্তু আমাদের অনেকেরই জানা নেই যে কাটো বাদাম ও কাজুবাদামের মধ্যে কি ধরনের উপকারিতা রয়েছে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক কাঠবাদাম ও কাজু বাদাম খাওয়ার উপকারিতা কতটুকু। নিচে কাঠবাদাম ও কাজুবাদাম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ
- প্রথমত কাঠ বাদাম ও কাজুবাদাম এর মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম। যা আমাদের দেহের জন্য খুবই উপকারী।
- এছাড়াও এর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন এ চা আমাদের অ্যানিমিয়া নামক রোগ ভালো করতে সাহায্য করে থাকে।
- এটি আমাদের ত্বক উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে থাকে।
- তাছাড়াও কাঠবাদাম ও কাজু বাদাম খাওয়ার ফলে আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
- এটি কম ক্যালরি ও উচ্চচর্বির জাতীয় খাবার হওয়ায় এটি আমাদের ওজন কমাতেও সাহায্য করে থাকে।
- কাজুবাদাম ও কাঠ বাদাম খাওয়ার ফলে এটি আমাদের উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক এবং হৃদরোগ সহ বিভিন্ন রোগ থেকে বাঁচতে সাহায্য করে থাকে।
- এটি রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
- কাজুবাদাম ও কাঠবাদাম যদি রাত্রে দুধের সাথে মিশিয়ে রেখে সকলের সেই দুধে ভিজিয়ে রাখা কাঠ ও কাজুবাদাম খেলে এটি আমাদের বার্ধক্যে হাড়ের ক্ষয় থেকে বাঁচতে সাহায্য করে এবং হরকে মজবুত করে।
কাঠ বাদাম ও কাজু বাদাম খাওয়ার নিয়ম
কাঠবাদাম ও কাজুবাদাম এর মধ্যে মোট চর্বির পরিমাণ ৮০ শতাংশ রয়েছে। তাই এটি হজম হতে বেশি সময় নিয়ে থাকে। এজন্য আয়ুর্বেদিক বিশেষজ্ঞরা এটি দিনে পাঁচ থেকে দশটি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তাছাড়াও কাঠবাদাম ও কাজুবাদাম খাওয়ার কিছু নিয়ম-নীতি রয়েছে যেটা মেনে না চললে এটি দেহের জন্য স্বাস্থ্যকর নাও হতে পারে। নিচে কাঠ ও কাজুবাদাম খাওয়ার কিছু নিয়মকানুন সম্পর্কে আলোচনা করা হলোঃ
- প্রথমত আমাদের পরিষ্কার ও বিশুদ্ধ মনের খাটো কাজুবাদাম খাওয়ার জন্য নির্বাচন করতে হবে।
- আমরা চাইলে কাট ও কাজুবাদাম সেমাই বা পায়েসের সাথে যুক্ত করে খেতে পারি।
- যেহেতু কাঠ বাদাম ও কাজু বাদাম শুকনা খেলে এটি আমাদের শরীর গরম করতে পারে। সেহেতু আমরা এটি ছয় থেকে সাত ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখার পর খেতে পারি।
- আমরা সকলেই এটি সকালে খালি পেটে খাওয়ার চেষ্টা করব।
- আমরা চাইলে এটি দুপুরে খাবারের পর স্ন্যাক্স হিসেবে কাজু ও কাঠ বাদাম খেতে পারি।
- আমরা অবশ্যই রাত্রেবেলা এই দুটি বাদাম খাওয়া থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করব।
- আমরা কাঠবাদাম খাওয়ার সময় চিচিং করে খাওয়ার চেষ্টা করব। কারণ এটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য বেশি উপকারী।
- আপনারা চাইলে কাঠবাদাম ও কাজুবাদাম এর গুড়া করে এটি বিভিন্ন খাবারের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন।
- গরম দুধের সাথে এর গুড়া মিশিয়ে খেলে ভালো উপকার পাওয়া যায়।
কাঠ বাদাম ও কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা
কাঠবাদাম ও কিসমিস খাওয়ার বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা রয়েছে যা আপনারা জানলে এগুলো নিয়মিত খেতে শুরু করে দেবেন। কাঠবাদাম ও কিসমিস এর যত ধরনের পুষ্টিগুণ রয়েছে তা বলে শেষ করা যাবেনা। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক কিসমিস ও কাঠ বাদাম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে।
কাঠবাদাম খাওয়ার উপকারিতা
- অনেকেই ধারণা করেন যে কার্ড বাদাম খেলে হয়তো আমাদের ওজন বেড়ে যেতে পারে। কিন্তু এই বিষয়টি একদম তার উল্টো, যারা নিয়মিত ডায়েট করে তারা ওজন কমানোর জন্য নিয়মিত কাটোয়া বাদাম সেবন করে থাকে।
- কাঠ বাদামের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন ই, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, জিংক এবং ম্যাগনেসিয়াম। যার ফলে কাঠবাদাম খাওয়ার কারণে আম এটি আমাদের শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা কমাতেও বেশ উপযোগী।
- কাঠবাদাম খাওয়ার ফলে আমাদের মস্তিষ্কের কর্ম ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। কারণ এর মধ্যে রয়েছে রিবোফ্লাবিন ও এল ক্যারনিটিন। এই দুটি উপাদান আমাদের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে থাকে।
- নিয়মিত কাঠ দাম খাওয়ার ফলেও এটি আমাদের ক্যান্সার প্রতিরোধের সাহায্য করে থাকে।
- কাঠবাদাম খাওয়ার ফলে এটি আমাদের ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। যার ফলে এটি আমাদের ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে থাকে।
- এটি আমাদের বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি জোগাতে সাহায্য করে এবং আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে বিশেষভাবে উপকারী।
- প্রতিদিন এক মুড কাঠবাদাম খাওয়ার ফলে এটি আমাদের শরীরের শক্তি যোগাতে সাহায্য করে থাকে।
কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা
- প্রথমত কিসমিসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা আমাদের হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে থাকে।
- কিসমিসের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম যা আমাদের শরীরের হাড় এবং দাঁতের জন্য খুবই উপকারী।
- কিসমিস খেলে আমাদের ঘুম ভালো হয়। কারণ কিসমিসের মধ্যে রয়েছে আয়রন আমরা যারা মানসিক অসুস্থতায় ভুগছি তাদের জন্য কিসমিস খুবই উপকারী একটি খাবার।
- কিসমিসের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যেগুলো আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে থাকে।
- কিসমিস খাওয়ার ফলে আমাদের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি হয়।
- কিসমিস খাওয়ার ফলে এটি আমাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় এবং ত্বকের পুষ্টি যোগায়।
- কিসমিসের মধ্যে রয়েছে পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম যে উপাদানগুলি আমাদের এসিডিটি কমাতে সাহায্য করে থাকে।
- কিসমিস আমাদের সুস্থভাবে ওজন বাড়াতেও সাহায্য করে থাকে।
দিনে কতটুকু কাঠ বাদাম ও কিসমিস খাওয়া উচিত
আমরা সকলেই জানি যে কাঠ বাদাম এবং কিসমিস আমাদের শরীরের জন্য কতটা উপকারী একটি খাদ্য। তবে এগুলো নিয়মের বাইরে বা অতিরিক্ত খেলে আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেহেতু কার্ড বাদাম শিশুদের মস্তিষ্ক গঠনের খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সেহেতু আমাদের উচিত হবে এটি অবশ্যই নিয়ম-নীতি মেনে খাওয়া। বিশেষজ্ঞরা বলেছে যে, কার্ড বাদাম হজম করা কঠিন সেহেতু আপনারা যখনই এটি হবেন তার আগে অবশ্যই এটি পাঁচ থেকে ছয় ঘন্টা ভিজিয়ে রেখে তারপর খাওয়ার চেষ্টা করবেন।
যেহেতু কাঠ বাদামে ৮০% চর্বি রয়েছে। সেহেতু এটি বেশি খাওয়ার ফলে আমাদের বদহজম বা পেট ফেটে যেতে পারে। এজন্যই আমরা দিনে পাঁচ থেকে দশটি করে কাঠ বাদাম খাওয়ার চেষ্টা করব। অপরদিকে কিসমিস একটি সুস্বাদু খাওয়ার এবং এর পুষ্টিগুণ অনেক বেশি।
তাই আমরা দৈনিক ২০ থেকে ৩০ গ্রাম কিসমিস খাওয়া আমাদের শরীরের জন্য পর্যাপ্ত হবে। কারণ এই পরিমাণ কিসমিসের মধ্যে রয়েছে আশি থেকে নব্বই পার্সেন্ট ক্যালরি যা আমাদের সক্রিয় থাকতে সহায়তা করে এবং পুরোপুরি ওজন বাড়াতেও সাহায্য করে থাকে।
কিসমিস খাওয়ার কিছু ক্ষতিকারক দিক
সকল কিছুরই যেমন উপকারিতা হয়েছে তেমনি কিছু ক্ষতিকারক দিকও রয়েছে। তবে কিসমিসের সাধারণত কোন সাইড ইফেক্ট নেই বললেই চলে তবে এটি অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে কিছু ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলতে পারে। আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন কিসমিসের কিছু ক্ষতিকারক দিক সম্পর্কে। তবে কিশমিশের ক্ষতিকারক দিক অনেক আংশিক কম। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক কিসমিস খাওয়ার কিছু ক্ষতিকারক দিকগুলো।
- কিশমিশের মধ্যে কেলোরির পরিমাণ অনেক বেশি থাকায়, আমরা যদি অতিরিক্ত পরিমাণে কিসমিস খেয়ে থাকি তাহলে এটি আমাদের অতিরিক্ত ওজন বাড়াতে পরে।
- যেহেতু কিসমিসের মধ্যে সুগার এর পরিমাণ বেশি থাকায় এটি যদি অতিরিক্ত খাওয়া হয় তাহলে ডায়াবেটিস রোগীদের অনেক ক্ষতিকারক দেখা দিতে পারে।
- কিসমিস অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে এর মধ্যে থাকা ফাইবার অতিরিক্ত পরিমাণে বেড়ে যায় যার ফলে আমাদের শরীরে বদহজম বা পেট ব্যথা সহ বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- কিসমিস এলার্জির সমস্যা বাড়াতে পারে, এজন্যই যাদের এলার্জি তারা কিসমিস খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url