জাতীয় শোক দিবস কবে থেকে পালন করা হয় বিস্তারিত আলোচনা।

বাংলাদেশ একটি স্বাধীন রাষ্ট্র দেশ। এই দেশেও জাতীয় শোক দিবস পালিত হয়ে থাকে। আর এই শোক দিবস টি পালন করা হয় আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে। আজকের আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনারা জাতীয় শোক দিবস কবে থেকে পালন করা হয় সহ আরো বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানতে পারবেন।
জাতীয় শোক দিবস
তাহলে চলুন আর দেরি না করে আজকের এই আর্টিকেলটি শুরু করা যাক। এই আর্টিকেলে আরো বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করা হবে তার জন্য প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রইলো।

বাংলাদেশে জাতীয় শোক দিবস কেন পালন করা হয়

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই প্রতিবছরই ১৫ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবস পালিত হয়ে থাকে। আর এই শোক দিবস টি পুরো দেশেই পালিত হয়ে থাকে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭৫ সালে আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কে তার স্বপরিবার সহ ৩২ জনকে গুলি করে মেরে দেওয়া হয়। এই দিনটিকে স্মরণীয় করতে এই শোক দিবসের আয়োজন করা হয়ে থাকে।

বাংলাদেশের প্রথম যখন আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসেছিল তখন প্রথম এই শোক দিবস পালিত হয়েছিল কিন্তু পরবর্তীতে ২০০২ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার ফলে এই শোক দিবস টি আবারো বাতিল করে দেওয়া হয়। এরপরে ২০০৮ সালে আবার যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে তখন এটি আবার প্রতি বছর ১৫ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালিত হয়ে থাকে। 

আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার পিতার এই মৃত্যুবার্ষিকীকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য এই দিনে পুরো দেশব্যাপী সরকারি ছুটি এবং অনুষ্ঠানের সহিত এই দিনটি উদযাপন করে থাকে। তাই বলা যায় বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তার মৃত্যুবার্ষিকীকে স্মরণীয় ও দোয়া মাহফিলের মাধ্যমে এই দিনটি উদযাপিত হয়ে থাকে।

১৫ আগস্ট বাংলাদেশে কি হয়েছিল?

১৯৭৫ সালের ১৫ ই আগস্ট বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে অত্যন্ত দুঃখজনক দিন। যে স্বল্প সংখ্যক মানুষ ইতিহাস সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাদের মধ্যে অন্যতম। তার উদ্যাত আহবানে বাংলার মানুষ সুখে দাঁড়িয়েছিল পশ্চিম পাকিস্তানে শোষক ও শাসক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। তিনি অপসহীনভাবে সংগ্রাম করে গেছেন। 

কিন্তু সেনাবাহিনীর কতিপয় বিপদগামী, উচ্চভিলাষী, বিভিন্ন সময় বরখাস্তকৃত সামরিক অফিসারের প্ররোচনায় ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট রাতে তাকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এই দিনটি আমাদের দেশে নিয়ে আসে একটি অন্ধকারের ছায়া। এই দিনে বঙ্গবন্ধু সহ খাদকরা রেহাই দেইনি তার শিশু রাসেল, বাবু এমনকি আত্মসত্ত্বা বধুও। 

কাউকে ছাড় দেওয়া হয়নি সেই দিন তার বাসায় সকলকে একসঙ্গে গুলি করে হত্যা করা হয়। আর এই দিনটিকেই চিরস্মরণীয় করার জন্যই এই দিনটিকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।

জাতীয় শোক দিবস কবে থেকে পালন করা হয়

জাতীয় শোক দিবস কবে থেকে পালন করা হয়? চলুন সেই বিষয় সম্পর্কে জেনে নেওয়া জাক। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। আর এই দিনটিকেই স্মরণীয় করে রাখার জন্য ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসে তখন এই দিনটিকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। কিন্তু পরবর্তীতে ২০০২ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পরে আবারো এই তিনটিকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে বাতিল করে দেয়।
জাতীয় শোক দিবস কবে থেকে পালন করা হয়
যার ফলে আওয়ামী লীগ ২০০৮ সালে আবার যখন ক্ষমতায় আসে তখন তারা এই দিনটিকে আবারো জাতীয় শোক দিবস হিসেবে ঘোষণা দেন। সেই থেকে প্রতি বছর আগস্ট মাসের ১৫ তারিখে এই শোক দিবস পালন হয়ে আসছে এখন অব্দি। সেই সাথে এই দিনটিতে সারা দেশব্যাপী সরকারি ছুটি ঘোষণা দিয়েছেন আমাদের সরকার।

যার ফলে ২০০৮ সাল থেকেই এই প্রথা অনুযায়ী জাতীয় শোক দিবস পালিত হয়ে আসছে। এই দিনটিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বিশেষ শ্রদ্ধাঞ্জলি ও দোয়া মাহফিল এর মাধ্যমে এই দিনটি পালন করা হয়ে থাকে।

কিভাবে শোক দিবস পালন করা হয়?

আমাদের দেশে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস পালিত হয়ে থাকে। এই দিনে পুরো দেশব্যাপী সরকারি ছুটি দেওয়া হয়। এই দিনে সূর্যদয়ের সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের সকল সরকারি, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ প্রায় প্রত্যেক জায়গায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর জন্য দোয়া ও কোরআন তেলাওয়াত করে শুরু করা হয়। আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী সকলের ধানমন্ডিতে তার পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এর প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে থাকেন। এই দিনে তিনি কালো পোশাক পড়ে শোক দিবসের অনুষ্ঠান পালিত করে থাকেন। 

দেশের প্রায় প্রত্যেকটি উপজেলায় বঙ্গবন্ধুর একটি করে মূর্তি তৈরি করা হয়েছে। যেখানে প্রতি বছর ১৫ই আগস্ট তার মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন সহ তাকে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য সেখানে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়ে থাকে। আর এই জাতীয় শোক দিবসে সকলেই সুখ বিজ্ঞাপনের জন্য কালো পোশাক পরিধান করে আসে। এভাবেই আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের প্রতি সকলের শ্রদ্ধা ও মোনাজাতের মাধ্যমে তার এই দিনটি পালিত হয়ে থাকে। 

এই দিনে জাতির পিতার কে শরণার্থে এই দিনটিতে প্রতিবছরই রচনা প্রতিযোগিতা সহ একটি সভার আয়োজন করা হয়ে থাকে। যেখানে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ দেশের সকল নেতা বক্তব্য দিয়ে থাকেন। এই ভাবেই এই দিনটি শোকের মাধ্যমে উদযাপিত হয়ে থাকে।

জাতীয় শোক দিবসে আমাদের যেসব করণীয়

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আমাদের এই দিনে কিছু করণীয় রয়েছে। তাহলে চলুন সেই বিষয়ে জেনে নেওয়া যাক। আমরা জানি ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কে এই দিনে তার স্বপরিবারে সহ মোট ৩২ জনকে হত্যা করা হয়। আর সেই থেকেই এই ১৫ আগস্ট কে শোক দিবস হিসেবে প্রতি বছর পালন করা হয়ে থাকে। আর এই শোক দিবস উপলক্ষে আমাদের কিছু করণীয় রয়েছে। 

আপনারা যদি সত্যিকারের বাঙালি হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এর প্রতি এই দিনে শ্রদ্ধা ও দোয়া কামনা করা আপনাদের কর্তব্য। তিনি বাংলাদেশের জন্য তার জীবনের অর্ধেক সময়ই জেলে কাটিয়েছেন এই দেশকে স্বাধীন করার জন্য। সাধারণত তার নির্দেশ মোতাবেক চলেই আমাদের দেশ স্বাধীন হয়েছিল। 

তাই তার এই সকল অবদান মনে রাখতে আমরা ১৫ই আগস্ট তাকে স্মৃতিময় ও শ্রদ্ধার জানানোর জন্য আমরা এই দিনে তার জন্য দোয়া মাহফিল ও তার আত্মার মাগফেরাতের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া প্রার্থনা করতে পারি। তাছাড়া এই দিনটি একটি শোকের দিন সেহেতু আমাদের উচিত হবে এই দিনে কোন প্রকার আনন্দ উল্লাস না করা। তা না হলে আমরা আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অবমাননা করা হবে। 

তাই আমরা অবশ্যই এই দিনে চলাফেরা আচার-আচরণ ইত্যাদি দিক বিশেষ সর্তকতা অবলম্বন করব। এই দিনে বিশেষ করে আমরা তার জন্য বেশি বেশি দোয়া করব এবং তার ও তার পরিবারের সকলের জন্যই আমরা দোয়া মাহফিল করতে পারি। আমরা এই সকল বিষয়ে বিবেচনা করেই এই দিনে শোক পালন করতে পারি।

জাতীয় শোক দিবসে কেন কালো পোশাক পড়া হয়?

শোক দিবসে কালো পোশাক পড়া হয়। কারণ বলা হয়ে থাকে প্রাচীন রোমানরা তাদের প্রিয়জনের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করার জন্য তারা গারো কালো রঙের পোশাক পরিধান করত। তখন থেকেই প্রায় বিশ্বের বেশিরভাগ দেশেই এই রীতি প্রচলন হয়েছে। আমাদের দেশেও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এর শোক দিবস পালন করার উপলক্ষে এই দেশের সকলেই তাকে শ্রদ্ধা ও সম্মান জানানোর জন্য মেয়েরা কালো শাড়ি বা বোরকা এবং ছেলেরা কালো পাঞ্জাবি পরিধান করে।
জাতীয় শোক দিবসে কেন কালো পোশাক পড়া হয়
আর এই কালো পোশাক পরিধান করা মানে জীবনের প্রতি নিরাশ হওয়া নয় বরং এই কালো পোশাক পড়া মনে হচ্ছে নিজের নিকটতম কোন প্রিয় মানুষের শোক প্রকাশ করা। আর এই প্রথাটি কালো পোশাক পরার রীতিটি রাণি ভিক্টোরিয়ার রাজত্বকালে চূড়ান্তভাবে গঠিত হয়েছিল। যেহেতু ১৯৭৫ সালে ১৫ ই আগস্ট আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কে হত্যা করে এ দেশে কালো অন্ধকারের ছায়া নেমে এসেছিল। 

তাই তার সেই শোক প্রকাশে এবং শ্রদ্ধা জানাতে আমাদের পুরো দেশব্যাপী এই ১৫ই আগস্টে কালো পোশাক পরে তার প্রতি শোক ও শ্রদ্ধা বোঝাতে এই কালো পোশাক পরিধান করে থাকে আমাদের দেশের মানুষ।

শেষ মন্তব্য

প্রিয় পাঠক, আপনারা আজকের এই আর্টিকেলে জাতীয় শোক দিবস কবে থেকে পালন করা হয় সহ আরো বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। আপনারা এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে জাতীয় শোক দিবস সম্বন্ধনীয় বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। তাহলে এই ধরনের আরো বিভিন্ন আর্টিকেল পাওয়ার জন্য আমাদের সাথে থাকুন এবং আমার ওয়েবসাইটটি ঘুরে দেখুন। সেই সাথে আজকের মত এখানেই বিদায় নিলাম। সকলে ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন এবং আমার জন্য সকলেই দোয়া রাখুন।
সকলকেই ধন্যবাদ!

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url