বেশি কলা খেলে কি হয় সেই সম্পর্কে আলোচনা?

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় দর্শক, আজকের এই আর্টিকেলটির বিষয় হচ্ছে, বেশি কলা খেলে কি হয়? যেহেতু কম বেশি সকলেই কলা খেতে পছন্দ করে, সেহেতু আজকের এই আর্টিকেলে আমরা কলা বিষয়ক বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে নিয়ে তুলে ধরার চেষ্টা করব। আর কলা পছন্দ করে না এই ধরনের মানুষের সংখ্যা অনেক কম।
পাকা কলা
তাই আজকের আর্টিকেলটি বেশি কলা খেলে কি হয় সহ আরব বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করা হবে। সেহেতু আপনাদের এই আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য অনুরোধ রইল।

পাকা কলা খেলে কি হয় ?

পৃথিবীতে প্রত্যেকটি মানুষ এই প্রায় পাকা কলা খেতে বেশি পছন্দ করে। আর এই পাকা কলার মধ্যে রয়েছে নানা রকম পুষ্টিগুণ উপকারিতা। আর এই পাকা কলা ছোট বড় সকলেই অনায়াসে খেতে পারে। পাকা কলা খাওয়ার ফলে মানুষের শরীরের রক্ত চলাচল ঠিক থাকে ও নিয়ন্ত্রণে থাকে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক, পাকা কলা খেলে কি হয়? নিচে সে সম্পর্কে আলোচনা করা হলোঃ
  • পাকা করার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম। যেটি খেলে আমাদের শরীরের হাড় শক্ত হয় এবং এটি আমাদের দাঁতের জন্য খুবই উপকারী একটি ফল।
  • এছাড়াও পাকা কলার মধ্যে রয়েছে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ ও ভিটামিন ই যা আমাদের শরীরে বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
  • এছাড়াও যারা নিয়মিত ব্যায়াম বা খেলাধুলার সাথে যুক্ত রয়েছে তাদের জন্য পাকা কলা একটি খুবই উপকারী খাবার। কারণ খেলাধুলার পর শরীরে খনিজ পদার্থের দরকার হয় যা এই পাকা কলার মধ্যে পাওয়া যায়।
  • তাছাড়া এই পাকা কলা খাওয়ার ফলে যাদের হৃদরোগ বা কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ রয়েছে এই পাকা কলা খেলে সেই সব রোগের প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
  • পাকা কলা মানুষের হার্ট ভালো রাখে। কারণ পাকা কলাতে রয়েছে পটাশিয়াম যা আমাদের হার্টের বেশি গুলোকে তাজা রাখতে সাহায্য করে।
পরিশেষে বলা যায় যে, পাকা কলা খেলে আমরা উক্ত উপকারিতা গুলো পেয়ে থাকে। তাই আমরা চাইলে প্রতিদিন থেকে তিনটি করে পাকা কলা খেতে পারি। এতে আমাদের শরীরের নানা রকম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।

নিয়মিত কলা খাওয়ার উপকারিতা

কলা হচ্ছে একটি উপকারী ও স্বাস্থ্যকর ফল। এই কলা খাওয়ার নানা রকম উপকারিতা রয়েছে। এটি আমাদের দেহের শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। পাশাপাশি এটি আমাদের বিভিন্ন রোগ বালাই থেকে দূরে রাখতে সাহায্য করে। আমরা সকলেই জানি কলা খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য কতটা উপকারী ও গুরুত্বপূর্ণ। তবে নিয়মিত কলা খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য আরও বিভিন্ন ধরনের উপকার নিয়ে আসে। চলুন নিয়মিত কলা খেলে যেসব উপকার আসে সে সকল বিষয়ে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
  • নিয়মিত কলা খেলে এটি আমাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা ও ত্বককে ভালো রাখতে বিশেষভাবে উপকারী।
  • নিয়মিত সঠিক পরিমাণে কলা খাওয়ার ফলে এটি আমাদের ওজন কমাতেও সাহায্য করে থাকে।
  • যেহেতু কলাতে পটাশিয়াম এর উৎস ভালো পরিমাণে রয়েছে। সেহেতু নিয়মিত কলা খাওয়ার ফলে এটি আমাদের দেহের লবণের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
  • কলাকে প্রাকৃতিক অ্যান্টাসিডও বলা হয়ে থাকে। কারণ প্রতিদিন কলা খেলে এটি আমাদের হজমের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে থাকে এবং এটি আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ প্রতিরোধে বিশেষভাবে সহায়তা করে থাকে।
  • নিয়মিত কলা খাওয়ার ফলে এটি আমাদের চোখের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি করে এবং এটি আমাদের হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখতেও সাহায্য করে থাকে।
  • কলাতে ভিটামিন সি এর পরিমাণ ভালো রয়েছে। যার ফলে নিয়মিত কলা খেলে এটি আমাদের পিসিকে মজবুত ও পেশীদের শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে থাকে।
তাই আমরা ওপরের আলোচনা থেকে বলতে পারি যে, নিয়মিত কলা খাওয়া আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। এটি আমাদের দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন ধরনের উপকার বয়ে আনে।

বেশি কলা খেলে কি হয় ?

কলা হচ্ছে একটি পচনশীল খাবার। যেটি কেনার পর একদিন বা দুইদিন পরেই পচন ধরতে শুরু করে। আর যখন এগুলো পচন ধরতে শুরু করে তখন সাধারণত কেউই এই সকল কলা খেতে চায় না। তবে কলা খাওয়ার যেমন উপকারিতা ও রয়েছে তেমনি এটি প্রয়োজনের বেশি খেলে এর বেশ কিছু ক্ষতিও রয়েছে। নিচে বেশি কলা খেলে কি হতে পারে সেই বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হলোঃ
বেশি কলা খেলে কি হয়
  • কলাতে যেহেতু প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে সেহেতু অনেক বেশি পরিমাণে কলা খেলে আমাদের কোষ্টকাঠিন্য রোগ দেখা দিতে পারে।
  • আবার কলাতে ক্যালরির পরিমাণ তুলনামূলক বেশি থাকায়। কলা বেশি থাকলে আমাদের ওজন বেড়ে যেতে পারে।
  • অতিরিক্ত কলা খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে মাইগ্রেনের মতো সমস্যা বাড়িয়ে তুলতে পারে।
  • এছাড়াও বেশি কলা খেলে আমাদের শরীরে গ্যাসের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
বেশি কলা খেলে আমাদের উপরে উক্ত সমস্যাগুলো দেখা দিতে পারে। তাই আমরা চেষ্টা করব সব সময় পরিমাণ মতো কলা খাওয়ার। এতে আমাদের কোন ধরনের সমস্যা দেখা দিবে না।

কলা খাওয়ার নিয়ম

পৃথিবীতে প্রত্যেকটা জিনিসের যেমন নিয়ম-কানুন রয়েছে। তেমনি কলা খাওয়ারও কিছু নিয়ম রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, আমরা নাস্তার সঙ্গে বা নাস্তা খাওয়ার পরে কলা খেতে পারি। আমরা অনেকেই খালি পেটে কলা খেয়ে থাকি। যেটা আমাদের মোটেও উচিত হবে না। কারণ কলার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট এবং প্রাকৃতিক গ্লুকোজ। 

আমরা যারা নিয়মিত কলা খায় তারা দিনে প্রত্যেকদিন দুই থেকে তিনটি কলা খাওয়ার চেষ্টা করব। এতে করে আমাদের শরীরে রক্ত চলাচল ও ভিটামিনের অভাব দূর হয়ে থাকে। আমরা সকালের নাস্তা সাথে কলা খাওয়া থেকে দূরে থাকবো। আর আমরা অবশ্যই পরিমাণমতো দিনে কলা খাওয়ার চেষ্টা করব। 

কারণ কলাতে শর্করার পরিমাণ প্রচুর রয়েছে তাই অধিক পরিমাণে কলা খেলে এটি আমাদের রক্তের শর্করা মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। আবার অতিরিক্ত কলা খেলে আমাদের ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে। তাই আমরা প্রত্যেকদিন নিয়ম মত কলা খাওয়ার চেষ্টা করব।

গর্ভাবস্থায় কাঁচা কলা খাওয়ার উপকারিতা

গর্ভাবস্থায় কাঁচা কলা খাওয়া নিরাপদ, কিন্তু এই ফলটি খাওয়ার সময় আমাদের বেশ কিছু জিনিস মাথায় রাখতে হবে। কলার মধ্যে রয়েছে পটাশিয়াম, ভিটামিন এ ও সি সহ মিনারেলে ভরপুর। আর গর্ভবতী মহিলাদের ফাইবারের পরিমাণ বেশি খেতে হয়। তাই এই কাঁচা কলা গর্ভবতী মহিলাদের জন্য খুবই উপকারী একটি খাওয়ার। নিচের গর্ভবতী মহিলাদের কাঁচা কলা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করাঃ
  • কলাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি ও এ যা গর্ভবতী মহিলাদের পেশী শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে ও চোখের জ্যোতি ও বাড়াতে সাহায্য করে।
  • কাঁচা কলায় যথেষ্ট পরিমাণে ফাইবার থাকায় এটি গর্ভবতী মহিলাদের মর্নিং সিকনেস এর সাহায্য করে।
  • কাঁচা কলা খেলে গর্ভবতী মহিলাদের পেট ভালো থাকে এবং বমি-বমি কমাতে সাহায্য করে।
  • কাঁচা কলায় প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকায় এটি গর্ভবতী মহিলাদের কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ থেকে বাঁচতে সাহায্য করে।
  • গর্ভবতী মহিলারা চাইলে কাঁটা কলা কে তরকারি হিসেবেও খেতে পারে এতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি পেয়ে থাকে।
  • কাঁচা কলা গর্ভবতী মহিলাদের শরীরের পুষ্টি উপাদান বৃদ্ধি করে এবং স্বাস্থ্যকর্তক বজায় রাখতে সাহায্য করে থাকে।
  • এটি শরীরের ক্যালসিয়াম ও হাড়ের পুষ্টি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে থাকে।
  • কাঁচা কলা খাওয়ার ফলে গর্ভবতী মহিলাদের দ্রুত এনার্জি বাড়ে। যেটি তাদের দেহে শক্তির বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।

কলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

আমাদের দেশে কম দাম যুক্ত ও সারা বছরই পাওয়া যায় এমন একটি ফল যার নাম হচ্ছে কলা। এই ফলটি আমাদের দেশে প্রায় সারা বছরই পাওয়া যায়। এই ফলটি দামে কম কিন্তু মানে অনেক ভালো।এই কলাটি আমাদের পুরো দেশেই খুব সহজেই পাওয়া যায়। আর এই কলার মধ্যে রয়েছে নানান রকম উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ। এই ফলের মধ্যে আমরা ভিটামিন, আইরন, কয়েজ পদার্থ আরো বিভিন্ন ধরনের উপকার পেয়ে থাকি। তবে প্রত্যেকটি মানুষের জন্য কলা খাওয়া উপকারিতা নাও হতে পারে। নিচে কলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হলোঃ
কলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

উপকারিতা

  • কলার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়াম। যা আমাদের দেহের জন্য খুবই উপকারী একটি ফল।
  • কলা ফলটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুবই উপকারী একটি ফল। কারণ এই ফলটি মিষ্টি হলেও এর মধ্যে সুগারের পরিমাণ নেই বললেই চলে। তাই ডায়াবেটিস রোগীরা এই ফলটি নির্দ্বিধায় খেতে পারে।
  • ফলাফলটি ছোট শিশুদের জন্য খুবই স্বাস্থ্যকর একটি খাবার। শিশুকে মায়ের দুধ ছাড়ানোর পরে আপনারা চাইলে পাকা কলা খাওয়াতে পারেন। কারণ পাকা কলা রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি ও ফাইবার। আর এই ফলটি নরম হওয়ার কারণে ছোট শিশুরা এই ফলটি খুব সহজেই খেতে পারে।
  • পাশাপাশি কলা খেলে আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
  • কলা খাওয়ার ফলে এটি আমাদের দেহের দুর্বলতা দূর করে এবং শরীরে এনার্জি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।

অপকারিতা বা যাদের জন্য ক্ষতিকারক

  • আমাদের যাদের কিডনি রোগের সমস্যা রয়েছে অবশ্যই কলা খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন।
  • খালি পেটে কলা খাওয়া হলে আমাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই আমরা সবসময় হালকা-পাতলা নাস্তার পরে কলা খাওয়ার চেষ্টা করব।
  • বেশি কলা খেলে আমাদের শরীরের ওজন বেড়ে যেতে পারে।
  • যাদের ডায়াবেটিস এর সমস্যা রয়েছে তারা পরিমাণ মতো কলা খাবেন। না হলে কলা বেশি খাওয়ার ফলে ডায়াবেটিস রোগীদের সুগার লেভেল বেড়ে যেতে পারে।
  • যাদের অ্যালার্জি, ঠান্ডা কাশি, সর্দি ইত্যাদি সমস্যা রয়েছে তারা কলা খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন।
পরিশেষে বলা যায় যে, কলাতে কিছুটা অপকারিতা রইলো এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা রয়েছে। তাই আমরা অবশ্যই পরিমাণ মতো নিয়মিত কলা খাওয়ার চেষ্টা করব। এতে আমাদের শরীর হবে সুস্থ ও সবল।

লেখকের মন্তব্য

প্রিয় পাঠক, আজকে আমরা এই ব্লগটিতে বেশি কলা খেলে কি হয় সহ আরো বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আশা করি আপনাদের কলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে কিছুটা হলেও ধারণা দিতে পেরেছি। এই ধরনের আরো নিত্য নতুন আর্টিকেল পড়ার জন্য আপনাদের আমার এই ব্লগটিতে স্বাগতম। 

আর এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনারা এরকম আরো নিত্য নতুন আর্টিকেল বা ব্লগ পড়তে চাইলে আমার এই ওয়েবসাইটটি ঘুরে দেখে আসতে পারেন এবং চাইলে আমার এই ওয়েবসাইটটিকে ফলো করে রাখতে পারেন।



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url