ব্রণের এন্টিবায়োটিক ঔষধ এর নাম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা।
ব্রণের এন্টিবায়োটিক ঔষধ এর নাম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে আজকের আর্টিকেলে। আপনারা অনেকেই জানতে চান যে, ব্রণের জন্য কোন ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক ঔষধ খাওয়া আমাদের জন্য উপকারী হবে। এজন্যই আজকের এই আর্টিকেলে ব্রণের অ্যান্টিবায়োটিক ঔষধ সম্পর্কে তুলে ধরার চেষ্টা করব।
আজকের আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রইলো। কারণ এখানে ব্রনের অ্যান্টিবায়োটিক ঔষধ এর নাম ছাড়াও আরো বিভিন্ন বিষয়ে সম্পর্কে আলোচনা করা হবে। এজন্যই এই আর্টিকেলটি একদম শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার চেষ্টা করবেন।
ব্রণের জন্য কোন ডাক্তার দেখাবো
বর্তমান সময়ে কিশোর কিশোরী সবার একটি সাধারণ সমস্যা হচ্ছে ত্বকের ব্রণ। আর এই সমস্যাটি সাধারণত হরমোন এর কারণে হয়ে থাকে। তবে অনেকের আবার এটি দীর্ঘস্থায়ী ভাবে থেকে যায়। যার ফলে তাদের ত্বকের সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যায়। আর এই সাংঘাতিক ব্রণ চলে গেলেও রেখে যায় ত্বকে বিভিন্ন ধরনের দাগ এবং ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গর্ত।
তাই এই ব্রণ থেকে রেহাই পেতে আমাদের অবশ্যই সঠিক ডাক্তারের পরামর্শ বা তাদের শরণাপন্ন হতে হবে। ব্রণের জন্য সাধারণত ত্বক বিশেষজ্ঞ বা ডার্মাটোলজিস্ট ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। ডার্মাটোলজিস্ট ডাক্তাররা ত্বকের সমস্যা ও ব্রণের চিকিৎসা দিয়ে থাকে। তারা ব্রণের কারণ নির্ণয় করতে পারে এবং উপযুক্ত চিকিৎসার পরামর্শ দেওয়ার সক্ষমতা রাখে।
তারা আপনার ত্বকের ধরন ও ব্রণের তীব্রতা অনুযায়ী সঠিক চিকিৎসার পরামর্শ এবং ঔষধ দিয়ে থাকবে। আর তাছাড়াও আপনারা যদি প্রথমে সাধারণ ডাক্তার দেখাতে যান, তাহলে তারা আপনাকে পরবর্তীতে ডার্মাটোলজিস্ট ডাক্তারের কাছে পাঠাবে। তাই আপনারা আপনাদের ব্রণের সমস্যার জন্য অবশ্যই ত্বক বিশেষজ্ঞ বা ডার্মাটোলজিস্ট ডাক্তার দেখানো সবচেয়ে উত্তম হবে।
ব্রণের জন্য এন্টিবায়োটিক কি ক্ষতিকর?
ব্রণ ভালো করার জন্য এন্টিবায়োটিক ঔষধ আমাদের ব্রণ ভালো করে দেই ঠিক। কিন্তু এটি আমাদের ক্ষতির কারণ ও হতে পারে। আর সাধারণত ডাক্তাররা ব্রণের অত্যন্ত গুরুতর অবস্থা না হলে এন্টিবায়োটিক ঔষধ খেতে নিষেধ করে। কারণ এতে আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। ব্রনের জন্য এন্টিবায়োটিক ব্যবহারের ফলে যে সকল ক্ষতি দেখা দিতে পারে সেগুলো নিচে আলোচনা করা হলো:
- অকারনে বা অযথা এন্টিবায়োটিক ব্যবহারের ফলে এটি ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দিতে পারে। যার ফলে আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ বাসা বাঁধতে পারে।
- এন্টিবায়োটিক ব্যবহারের ফলে আপনাদের পেটের সমস্যা দেখা দিতে পারে। যার ফলে আপনাদের ডায়রিয়া বা আমাশয়ের আশঙ্কা থেকে যায়।
- কিছু কিছু ক্ষেত্রে কিছু মানুষেরএন্টিবায়োটিক গ্রহণের ফলে তাদের এলার্জির মত সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- দীর্ঘদিন ধরে এন্টিবায়োটিক সেবন করলে এটি আমাদের খাওয়ার রুচি কমিয়ে দেই এবং শরীরকে রোগা করে দেয়।
উপরে উক্ত আলোচনা থেকে বলা যায় যে, এন্টিবায়োটিক ব্যবহারের ফলে আমাদের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। আর এন্টিবায়োটিক ব্যবহারের আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। আর তারা আপনার সমস্যা দেখেই আপনাকে সঠিক নির্দেশনা ও সতর্কতার পরামর্শ দিয়ে থাকবে। যদি আপনার ব্রণ গুরুতর না হয় তাহলে আপনাকে সাধারণ ঔষধ বা ক্রিম ব্যবহারে পরামর্শ দিয়ে থাকবে।
ব্রণের এন্টিবায়োটিক ঔষধ এর নাম
আপনারা অনেকেই ব্রণের জন্য কোন এন্টিবায়োটিক ঔষধ আমাদের জন্য ভালো তা খুঁজে থাকেন। আর এজন্যই আমরা আজকে এই আর্টিকেলে আপনাদের মাঝে নিয়ে এলাম ব্রণ দূর করতে যে ধরনের এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করলে আমাদের ত্বকের ব্রণ দূর হয়ে থাকে। তাহলে চলুন আর দেরি না করে সেই সকল এন্টিবায়োটিক ঔষধ গুলির সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। নিচে কিছু কার্যকরী এন্টিবায়োটিক ঔষধের নাম লেখা হলো:
- ডক্সিসাইক্লিন (Doxycycline)
- মিনোক্সিসাইক্লিন (Minocycline)
- টেট্রাসাইক্লিন (Tetracycline)
- এরিথ্রোমাইসিন (Erythromycin)
- ক্লিনডামাইসিন(Clindamycin)
উপরিউক্ত ঔষধ গুলি আমাদের ত্বকে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ কমাতে সাহায্য করে এবং আমাদের ব্রণের তীব্রতা কমাতেও বেশ উপকারী। এ সকল এন্টিবায়োটিক আমাদের ত্বক থেকে ব্রণ কে চিরতরে দূর করতে পারে। তবে এই সকল ঔষধ গুলি ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই একজন ত্বক বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরী। কারণ এই সকল ঔষধ গুলোর কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। যার জন্য আপনার এগুলো সঠিকভাবে ব্যবহার করার নির্দেশনা দরকার রয়েছে।
ব্রণের জন্য সবচেয়ে ভালো ফেসওয়াশ কোনটি?
ব্রণের কারণে আমাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা, কমলতা ও তারুণ্য লাবণ্যতা নষ্ট হয়ে যায়। আর এই ব্রণ দূর করার জন্য শুধু ক্রিম ব্যবহার করে এর সমাধান পাওয়া যায় না। এর জন্য ক্রিমের পাশাপাশি আমাদের ফেসওয়াশ ব্যবহার করারও প্রয়োজন রয়েছে। আর সাধারণত আমাদের ত্বকে হরমোন ক্ষরণের জন্য ব্রণের সৃষ্টি হয়ে থাকে।
আর এই সমস্যার জন্য বিশেষজ্ঞরা এর একটি সমাধান বের করে নিয়ে এসেছে। আজকে আমরা এই আর্টিকেলে জানব আমাদের ব্রণের জন্য সবচেয়ে ভালো ফেসওয়াশ কোনগুলো? নিচে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ
- Clozac Anti Acne Face Wash Gel এই ফেসওয়াশ টি মূলত ব্রণের সমস্যা দূর করার জন্যই তৈরি করা হয়েছে। এটি আপনার ত্বককে গভীর থেকে পরিষ্কার করে এবং আপনার ত্বক উজ্জ্বল করে থাকে।
- WOW Skin Science Anti-Acne Face Wash এই ফেসওয়াস টি মূলত স্যালিসাইলিক এসিড দিয়ে তৈরি। যা আমাদের ত্বকের মৃতশীলগুলোকে দূর করতে সাহায্য করে। মূলত এটি আপনার ত্বকের ব্রণের সমস্যা দূর করার জন্য একটি অন্যতম ফেসওয়াশ হতে পারে।
- Mamaearth Oil-free Face Wash এই ফেসওয়াস টি আপনাদের ত্বকের ব্রণের পাশাপাশি এটি ব্রণের দাগ দূর করতে ও বেশ উপকারী। কারণ এটি নিয়াসিনামাইড এবং সাইট্রিক অ্যাসিড দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। যা আপনাদের ত্বককে গভীর থেকে পরিষ্কার করতে সাহায্য করে থাকে।
- Himalaya Men Pimple Clear Neem Face wash এ ফেসওয়াস টি মূলত নিম এবং স্যালিসাইলিক এসিড দিয়ে তৈরি। যার ফলে এটি আমাদের ত্বকের কালো দাগ ও ব্রণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে থাকে।
- Neutrogena Oil-Free Acne Wash এই ফেসওয়াশটি স্যালিসাইলিক এসিড দিয়ে তৈরি যা আমাদের ত্বকের ব্রণ মুক্ত করতে খুবই কার্যকরী।
- PanOxyl Acne Foaming Wash এই ফেসওয়াস টি মূলত বেনজয়েল পারক্সাইড দিয়ে তৈরি। যা আমাদের ব্রণ জনিত ব্যাকটেরিয়া দূর করতে সাহায্য করে।
ব্রণের জন্য ডক্সিসাইক্লিন কতদিন খেতে হয়?
ডক্সিসাইক্লিন টেট্রা সাইক্লিন গোত্রের একটি বিস্তৃত বর্ণালীর উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন এন্টিবায়োটিক। এটি মূলত ব্যাকটেরিয়ার কোষের ভিতরে প্রোটিন সিনথেসিস বন্ধ করে দেয়। এই ঔষধটি আমাদের ত্বকের ব্রণের ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করতে সাহায্য করে। আর বেশিরভাগ ডাক্তার রায় গুরুতর ব্রণের সমস্যা হলে তারা এই ওষুধটি সেবন করার পরামর্শ দিয়ে থাকে।
আর এটি ব্রণের চিকিৎসার জন্য খুবই উপকারী একটি ঔষধ। এই ঔষধটি সাধারণত আপনাদের ব্রণের ধরন অনুযায়ী ডাক্তাররা এটি সেবন করতে বলে থাকে। গুরুতর ব্রণের সমস্যা দেখা দিলে ডাক্তাররা এটিকে 8 থেকে 12 সপ্তাহ পর্যন্ত ব্যবহার করার কথা বলে থাকে। তবে একটি ব্যক্তির ব্রণের অবস্থার ওপর নির্ভর করে।
ডাক্তাররা আপনার নির্দিষ্ট অবস্থায় ওপর ভিত্তি করে ডক্সিসাইক্লিন এর সঠিক ডোজ এবং ব্যবহারের সময়কাল নির্ধারণ করে দেয়। তবে এটি সেবন করার সময় কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। কারণ এর ফলে আপনাদের কোন ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিবে না। আর যে কোন ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন।
লেখকের মন্তব্য
প্রিয় পাঠক, আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনারা ব্রণের এন্টিবায়োটিক ঔষধ এর নাম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। আপনারা এই আর্টিকেলে ব্রণের এন্টিবায়োটিক ঔষধের নাম ছাড়াও আরো বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। আশা করি উক্ত বিষয়গুলো আপনাদের অনেক উপকারে আসবে। আজকের এই আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করবেন।
এতক্ষণ ধরে আমাদের পাশে থাকার জন্য আপনাদের অসংখ্য ধন্যবাদ। এ ধরনের আরও নিত্যনতুন আর্টিকেল পড়ার জন্য আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করুন। আর আজকের এই আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট সেকশনে গিয়ে কমেন্ট করুন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url