দুধের সর খাওয়ার ১৪ টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানুন।

দুধের সর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করব। আপনারা হয়তো বিভিন্ন জায়গায় এবং বিভিন্ন ওয়েবসাইট ঘুরে দেখেছেন কিন্তু এ বিষয়ে হয়তো সঠিক তথ্য পাচ্ছেন না। তাহলে চিন্তার কোন কারণ নেই আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করতে যাচ্ছি দুধের সর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।
দুধের সর দিয়ে রূপচর্চা
এছাড়াও আমরা আজকের এই আর্টিকেলে আরো বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করব। এজন্য আপনারা আজকের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার চেষ্টা করবেন। তাহলে আপনারা দুধের সর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সহ আরো বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানতেও বুঝতে পারবেন।

দুধের সর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

এই পর্বে আমরা দুধের সর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানব। দুধ ১৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় গরম করার পরে এর ওপরে একটি হলদে রঙের মোটা অংশ জমাট বাঁধে সেটিকেই আমরা দুধের সর বলে থাকি। আর এই দুধের সর মানবদেহের জন্য খুবই উপকারী একটি উপাদান।

দুধের সর খাওয়ার উপকারিতার পাশাপাশি এর কিছু অপকারিতাও রয়েছে। যেগুলো সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই অজানা। তাহলে আপনারা আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে দুধের সর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে বুঝতে পারবেন।

দুধের সর খাওয়ার উপকারিতা

  • দুধের সর খবর ফলে এটি আমাদের শরীরে প্রয়োজনীয় শক্তি সরবরাহ করে থাকে।
  • দুধের সরের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন এ, ডি এবং ই, যা আমাদের ত্বক, ও হাড়ের জন্য উপকারী।
  • তোদের সর্বোচ্চ ক্যালরিযুক্ত হওয়ায় এটি আমাদের ওজন বাড়াতে সাহায্য করে থাকে।
  • দুধের সর পরিমিত পরিমাণে খেলে এটি আমাদের শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে।
  • দুধের সর খাওয়ার ফলে এটি আমাদের শরীরকে মজবুত করতে সাহায্য করে থাকে।
  • দুধের সর খাওয়ার ফলে এটি আমাদের শরীরে আয়ুর্বেদিক হিসেবে কাজ করে থাকে এবং এটি আমাদের গ্যাসের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে থাকে।
  • দুধের সর খাওয়ার ফলে এটি আমাদের রক্তজনিত সমস্যা ও অ্যালার্জি সহ বিভিন্ন সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে।
  • দুধের সর খাওয়ার ফলে এটি আমাদের রক্তে উপস্থিত পিত্ত ও টক্সিন দূর করে থাকে।
  • দুধের সরয়ার ফলে এটি শিশুদের শরীরের বৃদ্ধি ও বিকাশে সহায়তা করে থাকে।

দুধের সর খাওয়ার অপকারিতা

  • দুধের সর অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে এটি আমাদের রক্তে অনেক সময় কোলেস্টেরলের মাত্রা অতিরিক্ত পরিমাণে বাড়িয়ে তুলে, যা আমাদের হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
  • দুধের সর এর মধ্যে রয়েছে সেচুরেটেড ফ্যাট আমাদের শরীরে ব্লাড সুগার এর মাত্রা বাড়িয়ে তুলতে পারে।
  • দুধের সর অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়ার ফলে এটি কারো কারো ক্ষেত্রে ত্বকের ব্রণের সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে।
  • বেশি পরিমাণে দুধের সর খেলে এটি আমাদের পরিপাকতন্ত্রের ক্ষতি করতে পারে।
  • অতিরিক্ত সরকার ওর ফলে এটি বদ হজম বা ডায়রিয়ার মত সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

দুধের সর মুখে দিলে কি হয়

দুধের সর মুখে দিলে কি হয় এই সম্পর্কে আপনারা এখন জানতে চেয়েছেন। আমরা এখন এ বিষয় নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করার চেষ্টা করব। দুধ একটি সুষম খাবার যার মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিগণ। আর দুধের সর আমাদের ত্বকের রূপচর্চায় ব্যবহার করা হয়ে থাকে এবং এটি খেতেও বেশ সুস্বাদু।
দুধের সর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
দুধের সর মুখে মাখলে এটি আপনাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করবে। এছাড়াও দুধের স্বর মুখে মাখলে একটি আমাদের আরো বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা নিয়ে আসে। যে সকল সম্পর্কে আপনাদের হয়তোবা জানা নেই। আসুন জেনে নেই দুধের সর মুখে মাখলে কি কি উপকারিতা হয়।
  • দুধের সর মুখে মাখার ফলে এটি আমাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে থাকে।
  • দুধের সর মুখে মাখার ফলে এটি আমাদের ত্বকে থাকা দূষিত পদার্থ ও ধুলাবালি পরিষ্কার করতে সহায়তা করে থাকে।
  • দুধের সাথে দুই চামচ মধু এবং অল্প গরম পানি মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে মুখে লাগালে এটি আমাদের ত্বকের সৌন্দর্য ও উজ্জ্বলতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  • উদ্দেশ্যর ত্বকের গভীরে প্রবেশ করে আদ্রতা প্রদান করে, যা আমাদের তক্কে করে স্বাস্থ্যবান ও সতেজ।
  • তুদের সর মুখে নিয়মিত ব্যবহার করলে এটি আমাদের ত্বকের দাগ ও কালচেভাব কমিয়ে আনে।
  • দুধের সর প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে যা আমাদের ত্বকের শুষ্কতা কমায় এবং ত্বককে নরম ও মসৃণ করে।
  • দুধের স্বর মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট অপেক্ষা করার ফলে। এটি আমাদের ত্বকের মৃত কোষের সরিয়ে আমাদের ত্বকে উজ্জ্বল করতে সহায়তা করে থাকে।

দুধের সর দিয়ে রূপচর্চা

দুধের সর দিয়ে রূপচর্চা এটি প্রাচীনকাল থেকেই হয়ে আসছে। বিশেষ করে প্রাচীনকালে রাজা-রানীরা ত্বকের রূপচর্চায় দুধের সর ব্যবহার করতেন। আর তার ফলেই খুলতো তাদের ত্বকের জেলা। বিশেষজ্ঞদের মধ্যে দুধের স্বরে রয়েছে সেচুরেটেড ফ্যাট যা আমাদের ত্বককে একাধিক ভাবে জেলা বাড়াতে সাহায্য করে থাকে।

তাহলে চলুন দুধের সর দিয়ে রূপচর্চা করার বিভিন্ন উপায় সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। যেগুলো সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই জানা নেই। নিচে দুধের সর দিয়ে রূপচর্চা করার সম্পর্কে আলোচনা করা হলোঃ
  • দুধের স্বরের সঙ্গে এক চামচ বেসন মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করে, মুখে ২০ মিনিট লাগিয়ে অপেক্ষা করুন। এরপর জল দিয়ে আপনার মুখ ধুয়ে ফেলুন। এর ফলে এটি আপনার ত্বকের হারিয়ে যাওয়া আদ্রতা ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করবে।
  • দুধের সর, কাঁচা হলুদ, বেসন, মধু আর লেবুর রস একসঙ্গে মিশিয়ে একটি পেজ তৈরি করুন। এরপর সেই তৈরিকৃত পেস্ট টি ত্বকে লাগান। এর ফলে এটি আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াবে।
  • দুধের সর এবং ওটসের গোড়া একসঙ্গে মিশিয়ে একটি পেস্ট বানিয়ে নিতে পারেন। এরপর সেই তৈরিকৃত পেস্টটি নিয়ম করে মুখে লাগালে এটি আপনার ত্বকের ধুলো ও মহিলা দূর করতে সাহায্য করবে এবং ত্বককে পরিষ্কার করবে।
  • দুধের সরের সাথে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে ত্বকে 20 মিনিট লাগিয়ে রাখুন। এরপর ত্বককে ভালোমতো দিয়ে ফেলুন। এটি করার ফলে এটি আপনার ত্বকের কালচে ভাব দূর করতে সাহায্য করবে।

দুধের সর দিয়ে নাইট ক্রিম

দুধের শর্তে নাইট ক্রিম তৈরি করার সম্পর্কে আমরা এখন জানব। দুধের সর্দি নাইট ক্রিম তৈরি করতে হলে আপনাকে কিছু সহজ উপাদান ও প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে। নিচে তাদের সাথে নাইট ক্রিম তৈরি করার সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।

প্রয়োজনীয় উপাদান
  • দুধের সর দুই টেবিল চামচ
  • নারকেল তেল এক টেবিল চামচ
  • গ্লিসারিন এক চা চামচ
  • লেবুর রস এক চা চামচ
তৈরি করার পদ্ধতি
একটি পাত্রে দুধের সর নিয়ে এতে নারিকেল তেল যোগ করুন এবং ভালো করে মিক্স করুন। এরপর মিশ্রণটি তৈরি হলে তার মধ্যে গ্লিসারিন, এবং লেবুর রস মিশিয়ে নিন। এরপরে মিশ্রণটি একটি পরিষ্কার কাচের বয়ামের মধ্যে ঢেলে রাখুন।

ব্যবহার পদ্ধতি
  • রাতে ঘুমানোর পূর্বে মুখ ভালোমতো পরিষ্কার করে নিন।
  • এরপর এই নাইট ক্রিমটি মুখে ও গলায় আলতো করে লাগিয়ে ম্যাসাজ করুন।
  • এরপর এই ক্রিমটি সারারাত রেখে দিয়ে সকালে মুখ কে ভালো করে ধুয়ে ফেলুন।
এই দুধের সর দিয়ে তৈরিকৃত নাইট ক্রিমটি আপনাদের ত্বকে ব্যবহার করার ফলে। এটি আপনাদের ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করবে এবং মসৃণ ও উজ্জ্বল করে তুলবে। নিয়মিত এটি ব্যবহার করার ফলে এটি ত্বকের জেল্লা বৃদ্ধি করবে।

দুধের সরের ফেসপ্যাক

দুধের সরের ফেসপ্যাক
দুধের সরের ফেসপ্যাক আমাদের ত্বকের জন্য উপকারী হতে পারে। দুধের সর আমাদের ত্বকে প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে এবং এটি আমাদের ত্বককে নরম অমুসলিমরাতে সাহায্য করে থাকে। এজন্য আমরা আজকের এই আর্টিকেলে দুধের স্বরের কিছু ফেসপ্যাক তৈরির প্রক্রিয়া এবং ব্যবহার সম্পর্কে আলোচনা করব। যেগুলো আমাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা এবং আদ্রতা বজায় রাখবে।
  • দুধের সর ও মধুর ফেসপ্যাক: মধুর মধ্যে রয়েছে আন্টি ইনফ্লেমেটরি গুণ। এজন্য দুধের সরের সঙ্গে মধু মিশিয়ে মাখলে এটি আমাদের ত্বকের বার্ধক্য প্রতিরোধ করবে এবং ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করবে। এজন্য ২ চামচ দুধের সরের সঙ্গে এক চামচ মধু ভালোমতো মিশিয়ে মুখে ও গলায় লাগিয়ে ১৫ মিনিট পর মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে।
  • দুধের সর ও হলুদ ফেসপ্যাক: দুধের স্বরের সঙ্গে হলুদ মিশিয়ে মাখলে এটি আমাদের ত্বকের বর্ণ উজ্জ্বল করতে সাহায্য করবে। এজন্য আপনাদের দুই চামচ দুধের স্বরের সঙ্গে এক চিমটি হলুদ গুঁড়া মিশিয়ে ত্বকের ওপর লাগান। এরপর ২০ মিনিট পর মুখকে ভালো মতো ধুয়ে ফেলুন।
  • দুধের সর, মধু ওবেসন ফেসপ্যাক: দুধের সরের সঙ্গে মধু এবং বেসন মিক্স করে একটি পেস্ট তৈরি করুন। এরপর সেই ফেসপ্যাকটি মুখে ও গলায় ১৫ থেকে ২০ মিনিট রেখে হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এর ফলে এটি আপনাদের ত্বকের দাগ ঝোপ ও ব্রণ কমাতে সাহায্য করবে এবং ত্বকের শুষ্কতা দূর করতেও সাহায্য করবে।

শেষ কথা

প্রিয় বন্ধুরা, আশা করি আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনারা দুধের সর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। এছাড়াও আমরা আজকেরে আর্টিকেলে আরো বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করেছি। যেগুলো আপনাদের ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন এবং আমাদের সাপোর্ট করবেন।

এতক্ষণ ধরে আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাদের জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ। এই ধরনের আরো নিত্য নতুন আর্টিকেল পড়ার জন্য আমার এই ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ফলো করুন। কারণ আমরা এখানে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন বাংলা আর্টিকেল লিখে পাবলিশ করে থাকি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url