ট্রায়োসিম ২০০ মি.গ্রা. খাওয়ার নিয়ম, কিসের ওষুধ ও এর কাজ কি।
ট্রায়োসিম ২০০ মি.গ্রা. খাওয়ার নিয়ম, কিসের ওষুধ ও এর কাজ কি? সম্পর্কে আজকের আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনারা উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানতে পারবেন।
এছাড়াও আমরা আজকের এই আর্টিকেলে ট্রায়োসিম ২০০ মি.গ্রা. এর দাম, উপকারিতা, পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া এবং এটি সেবনে সতর্কতা সম্পর্কেও আলোচনা করা হবে। এজন্য আপনারা আজকের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার চেষ্টা করুন।
ট্রায়োসিম ২০০ মি.গ্রা. এর দাম কত
ট্রায়োসিম ২০০ মি.গ্রা. এর দাম কত? এ সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই হয়তোবা জানা নেই। আর এজন্য আমরা ফার্মেসিতে এই ঔষধটি কিনতে গেলে এর সঠিক দাম না জানার কারণে অনেক সময় ওষুধটি কিনার পরে ঠকে যায়। এজন্য আমাদের ট্রায়োসিম ২০০ মি.গ্রা. এর সঠিক দাম সম্পর্কে জেনে থাকা অত্যন্ত জরুরী।
- প্রতিটি ঔষধের মূল্য: 45 টাকা
- প্রতিটি পাতার মূল্য ( প্রতিটি পাতায় চারটি করে ক্যাপসুল রয়েছে ): 180 টাকা
- প্রতিটি বক্সের মূল্য: 720 টাকা
ট্রায়োসিম ২০০ মি.গ্রা. খাওয়ার নিয়ম
ট্রায়োসিম ২০০ মি.গ্রা. ঔষধটি একটি অ্যান্টিবায়োটিক ঔষধ, যার সক্রিয় উপাদান হলো সেফিক্সিম ট্রাইহাড্রেট। এই ওষুধটি সাধারণত সংবেদনশীল জীবাণু গুচ্ছ দ্বারা সৃষ্ট সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায়তা করে থাকে।
এই ওষুধটি সঠিকভাবে সেবনের জন্য ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করা উচিত। তবে আপনারা চাইলে নিম্নলিখিত নিয়ম মেনে এই ঔষধটি সেবন করতে পারেন।
- প্রাপ্তবয়স্ক এবং ১২ বছরের উর্ধ্বে শিশুদের জন্য এই ঔষধটি প্রতিদিন এক থেকে দুইটি ক্যাপসুল সেবন করতে হবে।
- ৬ মাসের উপরের শিশুদের জন্য তাদের দৈহিক প্রতি কেজির জন্য ৮ মিঃগ্রাঃ করে সেবন করতে হবে অথবা শিশুর বয়স অনুযায়ী সেবন করতে হবে।
- ৬ মাসের নিচের শিশুদের জন্য এই ঔষধটি ব্যবহারের কোন নিরাপত্তা ও কার্যকারিতা এখনো প্রতিষ্ঠিত হয়নি।
- এই ওষুধটির ডোজ পূরণের জন্য সাধারণ অবস্থায় ৭ দিন এবং রোগীর অবস্থা তীব্র হলে ১৪ দিন পর্যন্ত সেবন করা যেতে পারে।
- যেহেতু এটি একটি অ্যান্টিবায়োটিক ঔষধ সেহেতু একটি খাবারের পরে সেবন করতে হবে।
ট্রায়োসিম ২০০ মি.গ্রা. কিসের ওষুধ
ট্রায়োসিম ২০০ মি.গ্রা. ওষুধটির মূল উপাদান হলো সেফিক্সিম ট্রাইহাড্রেট, যা একটি তৃতীয় প্রজন্মের সেফালোস্পোরিন জাতীয় এন্টিবায়োটিক ঔষধ। এই ঔষধটি বিভিন্ন ধরনের গ্রাম-পজিটিভ এবং গ্রাম-নেগেটিভ জীবাণুর বিরুদ্ধে জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই করে ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করে।
আমাদের শরীরে যে সকল ব্যাকটেরিয়া কোষ প্রাচীরে বাধা প্রদান করে এই ঔষধি সেসকল ব্যাকটেরিয়াকে মেরে ফেলে। এরমধ্যে বিটা-ল্যাকটামেজ এনজাইম এর উপস্থিতির কারণে এটি বিভিন্ন ধরনের জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
এই ঔষধটি উচ্চ শাসনের সংক্রমণ, নিম্ন শাসনের সংক্রমণ, মূত্রনালীর সংক্রমণ এবং এন্টারোব্যাক্টর প্রজাতি সহ সাধারণভাবে সংক্রামিত রোগজীবাণু দ্বারা সৃষ্ট সংক্রমণের ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করতে সাহায্য করে থাকে।
ট্রায়োসিম ২০০ মি.গ্রা. এর কাজ কি
ট্রায়োসিম ২০০ মি.গ্রা. ওষুধটি বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড তৈরিকৃত একটি ঔষধ। এই ঔষধটির সক্রিয় উপাদান হচ্ছে সেফিক্সিম ট্রাইহাড্রেট। এটি সাধারণত বিভিন্ন ধরনের সংবেদনশীল জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত সংক্রমণ দূর করতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
এছাড়াও এই ঔষধটি নিম্নলিখিত সংক্রমণগুলোর চিকিৎসার জন্য নির্দেশিত।
- এই ঔষধটি উচ্চ শ্বাস নালীর সংক্রমণ যেমন: ওটিটিস মিডিয়া, এবং অন্যান্য URTI এবং গুরুতর সংক্রমণ এর বিরুদ্ধে কাজ করে থাকে।
- এটি অজটিল মূত্রনালীর সংক্রমণ যেমন: সিস্টাইটিস, সিস্টোরিথ্রাইটিস, পাইলোনেফ্রাইটিস রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
- এছাড়াও এটি নিম্ন শ্বাসনালের সংক্রমণ এর চিকিৎসায়ক কাজ করে থাকে।
- এটি নেইসিরিয়া গনেরি দ্বারা হাওয়া গনেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে থাকে।
- স্ট্রেপ্টোকক্কাস পায়োজেনস দ্বারা হাওয়া ফ্যারিনজাইটিস এবং টনসিলাইটিস রোগের চিকিৎসায় এটি কাজ করে।
- এই ছাড়াও এই ঔষধটি হিমোফিলাস ইনফ্লুয়েঞ্জি দ্বারা হওয়া একিউট ব্রংকাইটিস এবং একিউট এক্সাসারবেশন অব ক্রনিক ব্রংকাইটিস এর চিকিৎসায়ও কার্যকর।
ট্রায়োসিম ২০০ মি.গ্রা. এর উপকারিতা
ট্রায়োসিম ২০০ মি.গ্রা. এর উপকারিতা সম্পর্কে আমরা এখন জানব। ট্রায়োসিম ২০০ মি.গ্রা. একটি তৃতীয় প্রজন্মের সেফালোস্পোরিন জাতীয় অ্যান্টিবায়োটিক ঔষধ। এটির মূল কাজ হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ দূর করা। তবে এর কিছু উপকারিতাও রয়েছে যেগুলো সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই অজানা। নিচে সে সকল উপকারিতা সম্পর্কে তুলে ধরা হলোঃ
- এই ঔষধটি গ্রহণের ফলে এটি আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে।
- এটি আমাদের শরীরের শ্বাসনালীর সংক্রমণ, মূত্রনালীর সংক্রমণ এবং আরো বিভিন্ন ধরনের সংবেদনশীল জীবাণু দ্বারা সৃষ্ট সংক্রমণ সমূহের বিরুদ্ধে লড়াই করে থাকে।
- এছাড়াও এটি ব্যাকটেরিয়া দ্বারা উৎপন্ন বিটা-ল্যাকটামেজ এনজাইমের উপস্থিতিতেও সেফিক্সিম সুস্থিত থাকে।
- এই ওষুধটি গ্রহণের ফলে এটি আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে থাকে।
ট্রায়োসিম ২০০ মি.গ্রা. এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
প্রত্যেকটি ঔষধের উপকারিতার পাশাপাশি এর কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। তবে কিছু ওষুধের বেশি এবং কিছু ওষুধের কম পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়ে থাকে। ট্রায়োসিম ২০০ মি.গ্রা. ওষুধটিও এর বাইরে নয়। এটি আমাদের বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ থেকে বাঁচতে সাহায্য করে থাকে।
কিন্তু এটি গ্রহণের ফলে এর কিছু সাধারণ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। তবে সে সকল সাধারণ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াগুলো। চিকিৎসা বন্ধ করার পর সেসকল পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলোও দূর হয়ে যায়। নিচে এর কিছু সাধারণ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে তুলে ধরা হলোঃ
- বমি বমি ভাব
- পেট ব্যথা
- বদহজম
- পেট ফাঁপা
- মাথাব্যথা
- মাথা ঘোরা
- ডায়রিয়া
- মলের ধরন পরিবর্তন
এ সকল সাধারণ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ছাড়াও এটি সেবন করার ফলে বিভিন্ন ধরনের এলার্জি যেমন ফুসকুড়ি, চুলকানি, ঔষধ জনিত জ্বর এবং সন্ধি ব্যথার মত সমস্যা ও দেখা দিতে পারে। তবে এগুলো ঔষধ বন্ধ করার সাথে সাথে স্বাভাবিক হয়ে যায়।
ট্রায়োসিম ২০০ মি.গ্রা. সেবনে সতর্কতা
ট্রায়োসিম ২০০ মি.গ্রা. সেবনে বেশ কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। যারা মন্ত্রণালীর রোগ, বিশেষ করে বৃহদ্বন্দ্বে প্রদাহ রয়েছে তাদের এ ওষুধটি সেবনের ফলে বিশেষ সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে। এছাড়াও যাদের সেফালোস্পোরিন জাতীয় এন্টিবায়োটিক ঔষধে সংবেদনশীলতা রয়েছে তাদের এই ঔষধটি গ্রহণে সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত।
এছাড়াও যাদের কিডনিতে সমস্যা রয়েছে বা অবিরাম এম্বুলেটরী পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিস এবং হিমোডায়ালাইসিস করতে হয় তাদের ক্ষেত্রে এই ঔষধটি সতর্কতার সাথে ব্যবহার করা উচিত। যারা গুরুতর কিডনির সমস্যায় ভুগছেন তাদের প্রতিদিন কক মাত্রা ২০০ মি.গ্রা. এর বেশি মাত্রা গ্রহণ করা উচিত নয়।
তাছাড়াও এই ঔষধটি গ্রহণের ফলে যদি আপনাদের গুরুতর কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়ে থাকে তাহলে এটি সেবন করা বন্ধ করা উচিত এবং ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত হবে।
লেখক এর মন্তব্য
প্রিয় পাঠক, আশা করি আজকের আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনারা ট্রায়োসিম ২০০ মি.গ্রা. খাওয়ার নিয়ম, কিসের ওষুধ ও এর কাজ কি সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানতে পেরেছেন। সেই সাথে আমরা এখানে ট্রায়োসিম ২০০ মি.গ্রা. সম্পর্কে আরো বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করেছি। যেগুলো আপনাদের ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন।
এই ধরনের আরও নিত্য নতুন আর্টিকেল পড়ার জন্য আমার এই ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ফলো করুন এবং আমাদের সাপোর্ট করুন। এতক্ষণ ধরে আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাদের জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনাদের যদি কোন মতামত থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করে জানাবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url