ইসোনিক্স ২০ কিসের ঔষধ এবং এর কাজ কি সম্পর্কে জানুন।
ইসোনিক্স ২০ কিসের ঔষধ এবং এর কাজ কি এ বিষয়ে আপনারা জানতে চেয়েছেন। তাহলে চিন্তার কোন কারণ নেই আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ইসোনিক্স ২০ কিসের ঔষধ এবং এর কাজ কি সেই বিষয়ে আলোচনা করব।
এছাড়াও আমরা আজকের এই আর্টিকেলে আরো বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে তুলে ধরব। এই জন্য আপনারা আজকের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার চেষ্টা করুন।
ইসোনিক্স ২০ এর দাম কত
ইসোনিক্স ২০ ট্যাবলেটটি ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড দারা তৈরিকৃত একটি ঔষধ। এই ঔষধের সঠিক মূল্য হলোঃ
- প্রতিটি ট্যাবলেটের দাম: 7.00 টাকা
- প্রতিটি পাতার দাম ( প্রতিটি পাতায় ১৪ টি করে ট্যাবলেট থাকে ): 98.00 টাকা
- প্রতিটি বক্সের মূল্য: 490.00 টাকা ( এই বক্সে পাঁচটি ঔষধের পাতা রয়েছে ), 686.00 টাকা ( এই বক্সে সাতটি ঔষধের পাতা রয়েছে )
ইসোনিক্স ২০ কিসের ঔষধ
ইসোনিক্স ২০ ট্যাবলেটটি ইসোমেপ্রাজল গ্রুপের একটি ঔষধ। এটি একটি প্রোটন পাম্প ইনহিবিটর যা গ্যাস্ট্রিক প্যারাইটাল কোষে অবস্থিত H+/K+ ATPase এনজাইম সিস্টেমের সাথে কোভালেন্ট বন্ধনের মাধ্যমে যে এসিড নিঃসরণ হয়, এটি সে এসিড নিঃসরণের প্রধান ধাপ কে বাধা দেয়।
ইসোমিপ্রাজল গ্রুপের ঔষধ গুলো সাধারণত প্রোটন পাম্প ইনহিবিটরের প্রথম একক অপটিক্যাল আইসোমার, যা রেসিমিক প্রোটন পাম্প এর চাইতে অধিক পরিমাণে এসিড নিয়ন্ত্রণ করতে সহযোগিতা করে।
এছাড়াও ইসোনিক্স ২০ ট্যাবলেটটি একটি প্রোটন পাম্প ইনহাবিটর (PPI)। যা সাধারণত আমাদের পাকস্থলীতে এসিডের পরিমাণ কমিয়ে এসিড সম্পর্কিত বদহজম এবং বুক জ্বালা উপশমে সাহায্য করে।
ইসোনিক্স ২০ এর কাজ কি
ইসোনিক্স ২০ ট্যাবলেটটি ইসোমিপ্রাজল গ্রুপের একটি ঔষধ, যা ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড কোম্পানির দ্বারা তৈরি করা হয়েছে। এই ঔষধটি সাধারণত আমাদের গ্যাস্ট্রিক জনিত সমস্যার সমাধানের কাজ করে থাকে। এছাড়াও এই ঔষধটি নিম্নলিখিত উপসর্গের জন্য নির্দেশিত-
- এটি গ্যাস্ট্রো ইসোফেগাল রিফ্লেক্স রোগের চিকিৎসায় কাজ করে থাকে।
- ইরোসিভ ইসোফেজাইটিস নিরাময়ে এই ঔষধটি কাজ করে।
- এই ওষুধটি গ্যাস্ট্রিক আলসার ও ডিওডেনাল আলসার এর ক্ষেত্রেও ব্যবহৃত হয়।
- এটি আমাদের শরীরে এসিড সম্পর্কিত ডিসপেসিয়া রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।
- এটি হেলিকোব্যাক্টর পাইলোরি নির্মূলের মাধ্যমে ডিওডেনাল আলসারের পুনরাবৃত্তির ঝুঁকি কমিয়ে থাকে।
- এছাড়াও এটি জলিঞ্জার-ইলিশন সিনড্রোমসহ প্যাথলজিক্যাল হাইপারসিক্রেটরি চিকিৎসায়ও ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
ইসোনিক্স ২০ খাওয়ার নিয়ম
ইসোনিক্স ২০ ট্যাবলেটটি আমাদের গ্যাস্ট্রিক জনিত বিভিন্ন ধরনের রোগের চিকিৎসায় কাজ করে থাকে। এই জন্য এই ঔষধটি বিভিন্ন ধরনের রোগের জন্য এই ঔষধটি খাওয়ার নিয়ম আলাদা হবে। তাহলে চলুন এইবার এই ঔষধটি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
- এই ঔষধটি যেহেতু ইসোমিপ্রাজল গ্রুপের ঔষধ সেহেতু এটি খাওয়ার খাওয়ার এক ঘন্টা পূর্বে সেবন করতে হবে।
- ইরোসিভ ইসোফ্যাগিটিস নিরাময়ের ক্ষেত্রে: ২০/৪০ মি.গ্রা. হিসেবে প্রতিদিন একবার করে ৪-৮ সপ্তাহ পর্যন্ত সেবন করতে হবে।
- গ্যাস্ট্রোইসোফেগাল রোগ সমুহের ক্ষেত্রে: ২০ মি.গ্রা. হিসেবে প্রতিদিন একবার করে চার সপ্তাহ পর্যন্ত সেবন করতে হবে।
- ডিওডেনাল আলসারের ক্ষেত্রে: দৈনিক ২০ মিলিগ্রাম করে ২-৪ সপ্তাহ পর্যন্ত সেবন করতে হবে।
- গ্যাস্ট্রিক আলসারের ক্ষেত্রে: দৈনিক ২০-৪০ মি. গ্রা. মাত্রায় ৪-৮ সপ্তাহ পর্যন্ত সেবন করতে হবে।
- জলিঞ্জার ইলিশন সিনড্রোম এর ক্ষেত্রে: দৈনিক ২০-৮০ মি.গ্রা. মাত্রায় রোগীর বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী সেবন করতে হবে এবং ডাক্তাররা যতদিন এটি খাওয়ার নির্দেশনা দিবে ততদিন পর্যন্ত চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হবে।
- প্রাপ্তবয়স্ক যাদের বয়স ১৮ বা ১৮ চেয়ে বেশি তাদের ইরোসিভ ইসোফেগাইটিস সহ গ্যাস্ট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স রোগীদের ক্ষেত্রে: প্রতিদিন ২০ মি.গ্ৰা. বা ৪০ মি.গ্রা. মাত্রায় দিনে একবার সেবন করতে হবে।
- এছাড়াও শিশুদের জন্য যাদের বয়স ১ থেকে ১৭ বছর তাদের ক্ষেত্রে: ১০-২০ মি.গ্রা. মাত্রায় প্রতিদিন একবার করে সেবন করতে হবে।
ইসোনিক্স এর উপকারিতা
ইসোনিক্স ওষুধটি সেবনে বেশ কিছু উপকারিতা রয়েছে। যেগুলো সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই অজানা। তাহলে চলুন এবার ইসোনিক্স এর উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। এই অংশটি সাধারণত আমাদের গ্যাস্ট্রিকজনিত বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
এছাড়াও এই ঔষধটি সেবনের ফলে এটি আমাদের যে ধরনের উপকারিতা করে থাকে। সেগুলো সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত উল্লেখ করা হলোঃ
- এই ঔষধটি সেবনের ফলে এটি আমাদের পেপটিক আলসার রোগের চিকিৎসায় কাজ করে থাকে।
- এই ওষুধটি আমাদের শরীরের মধ্যে গ্যাস্ট্রিকের কারণে তৈরি হওয়া এসিডিটি, পেট জ্বালা, বুক জ্বালাপোড়া প্রতিরোধে সহযোগিতা করে থাকে।
- এটি আমাদের পেটের মধ্যে অতিরিক্ত এসিড অপসারণ করতে সহযোগিতা করে।
- এছাড়াও গ্যাস্ট্রিকের কারণে আমাদের যে পেট ব্যাথা হয় এই ঔষধটি খাওয়ার ফলে এটি সেই পেট ব্যথার সমস্যা দূর করতে সহযোগিতা করে।
- ইন-স্টেরয়ডাল প্রদাহরোধী ওষুধ দ্বারা চিকিৎসার ফলে সৃষ্ট গ্যাষ্ট্রিক আলসার দূর করতেও এই ওষুধটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ইসোনিক্স ২০ এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
প্রত্যেকটি ঔষধের মতোই ইসোনিক্স ওষুধটি গ্রহণের ফলেও এর কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। তবে সে সকল পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলো মৃদু ও অস্থায়ী হিসেবে দেখা যায়। ইসোনিক্স ঔষধটি সেবনের ফলে যে সকল পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলোঃ
- মাথাব্যথা
- ডায়রিয়া
- বমি বমি ভাব
- তলপেটে ব্যথা
- কোষ্ঠকাঠিন্য
এ সকল সাধারণ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ছাড়াও এর কিছু গুরুতর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। তবে সেই গুরুতর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলো ১০০০ জনের মধ্যে একজনের দেখা দিতে পারে। সেগুলো হলোঃ
- ত্বক ও চোখ হলুদ বর্ণের হয়ে যেতে পারে
- গাঢ় প্রস্রাব
- লিভারের সমস্যা
- অবিরাম ডায়রিয়া
- হাইপোম্যাগনেসিমিয়া
এ সকল গুরুত্তর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলো দেখা দিলে তাৎক্ষণিক চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন।
ইসোনিক্স ২০ ব্যবহারে সতর্কতা
ইসোনিক্স ওষুধটি আমাদের গ্যাস্ট্রিক জনিত বিভিন্ন রোগ নিরাময় কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। তবে এই ওষুধটি গ্রহণের কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। তা না হলে আপনাদের অজান্তেই বা সতর্কতার সাথে গ্রহণ করার ফলে আপনার মারাত্মক ক্ষতির মধ্যে পড়তে পারেন।
ইসোনিক্স ঔষধটি গ্যাস্ট্রিক আলসারের ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই ম্যালিগন্যান্সির সম্ভাবনা যাচাই করে নিতে হবে। তা না হলে এটি গ্যাস্ট্রিক আলসার রোগের লক্ষণ সমূহকে ঢেকে দিয়ে রোগ নিরূপণে এর বিকল্প ঘটাতে পারে।
শেষ মন্তব্য
প্রিয় পাঠক, আশা করি আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনারা ইসোনিক্স ২০ কিসের ঔষধ এবং এর কাজ কি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এবং বুঝতে পেরেছেন। এছাড়াও আমরা আজকের এই আর্টিকেলে ইসোনিক্স ২০ ওষুধ টির সম্পর্কে আরো বিস্তারিত আলোচনা করেছি। যেগুলো আপনাদের ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন।
এই ধরনের আরও নিত্য নতুন আর্টিকেল পড়ার জন্য আমার এই ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ফলো করুন এবং আমাদের সাপোর্ট করুন। কারণ আমরা এখানে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন বাংলা আর্টিকেল লিখে পাবলিশ করে থাকি। এতক্ষণ ধরে আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাদের জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url