ডক্সিক্যাপ এর কাজ কি, কিসের ঔষধ, খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানুন।
ডক্সিক্যাপ এর কাজ কি, কিসের ঔষধ, খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আজকের আর্টিকেল আলোচনা করা হবে। আপনারা হয়তো এই বিষয়ে বিভিন্ন জায়গায় এবং বিভিন্ন ওয়েবসাইট খুঁজে দেখেছেন। কিন্তু এই বিষয়ে হয়তো নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্য পাচ্ছেন না।
তাহলে চিন্তার কোন কারণ নেই আজকে আর্টিকেলে আমরা ডক্সিক্যাপ ক্যাপসুল এর কাজ কি, কিসের ঔষধ, এবং এটির খাওয়ার নিয়ম সহ আরো বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করব। এজন্য আপনারা আজকের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার চেষ্টা করুন।
ডক্সিক্যাপ ক্যাপসুল এর দাম কত
ডক্সিক্যাপ ক্যাপসুলটি রেনেটা আনলিমিটেড দ্বারা তৈরিকৃত একটি ঔষধ। এই ঔষধটির সঠিক মূল্য হলোঃ
- প্রতিটি ক্যাপসুল এর দাম: 2.20 টাকা
- প্রতিটি পাতার দাম ( প্রতিটি পাতায় দশটি করে ক্যাপসুল রয়েছে ): 22.00 টাকা
- প্রতিটি বক্সের মূল্য: 220.00 টাকা
ডক্সিক্যাপ ক্যাপসুল এর কাজ কি
ডক্সিক্যাপ ক্যাপসুলটি রেনেটা লিমিটেড দ্বারা তৈরিকৃত একটি ঔষধ। যার সক্রিয় উপাদান হলো ডক্সিসাইক্লিন হাইড্রোক্লোরাইড। এই ঔষধটি টেট্রাসাইক্লিন গ্রুপের একটি অ্যান্টিবায়োটিক, যা সাধারণত বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমনের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।
এছাড়াও এই ঔষধটি নিম্নলিখিত উপসর্গের জন্য কাজ করে থাকে। সেগুলো হলোঃ
- এই ঔষধটি রেসপীরেটরী ট্রাক্ট ইনফেকশন যেমন: নিউমেনিয়া, ইনফ্লুয়েঞ্জা, ব্রঙ্কাইটিস, টনসিলাইটিস, ট্রাকিয়াইটিস, সাইনুসাইটিস ইত্যাদি রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।
- গ্রাস্ট্রোইনটেসটিনাল জনিত ইনফেকশন যেমন: কলেরা, ট্রাভেলারস ডায়রিয়া, সিজেলা ডিসেন্ট্রি, একিউট ইনটেসটিনাল এমেবিয়াসিস ইত্যাদির চিকিৎসায় এই ওষুধটি কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
- এটি আমাদের চোখের ইনফেকশন যেমন: লিম্ফোগ্রানুলোমা, ভেনেরিয়াম লিটাকোসিস, ট্রাকোমা এর চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।
- এছাড়াও এটি আমাদের বিভিন্ন ধরনের যৌনবাহিত রোগ যেমন: নন-গনকক্কাল ইউরেথ্রাইটিস, একিউট পেলভিক ডিজিজ, আনকমপ্লিকেটেড ইরেথ্রাল ও এন্ডােসারভাইকাল অথবা রেকটাল ইনফেকশন, গনােরিয়া, সিফিলিস, পাইলোনেফ্রাইটিস, সিসটাইসিস এর চিকিৎসায় কার্যক্রম।
- তাছাড়াও এটি আমাদের আরও বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ কলেরা, অ্যাকনে, ইনফ্লশন কনজাঙ্কটিভাইটিস, ব্রুসেলােসিস, টুলারেমিয়া সেলুলাইটিস এই সকল রোগের চিকিৎসায়ক কাজ করে থাকে।
ডক্সিক্যাপ কিসের ঔষধ
ডক্সিক্যাপ ক্যাপসুলটির মূল উপাদান হলো ডক্সিসাইক্লিন হাইড্রোক্লোরাইড, যা সাধারণত টেট্রাসাইক্লিন গ্রুপের একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন এন্টিবায়োটিক। এই ঔষধটি গ্রাম পজিটিভ, গ্রাম নেগেটিভ, স্পাইরােচেট, মাইকোপ্লাজমা, রিকেটসিয়া ও মাইক্রোব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
এছাড়াও এটি যৌনবাহিত সমস্যা গণােরিয়া ও সিফিলিস এর চিকিৎসায় পেনিসিলিন হিসেবেও ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এই ঔষধটির মূল উপাদান ডক্সিসাইক্লিন এর মূল ধারণ হলো এটি বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়ার কোষের ভিতরে প্রোটিন সিনথেসিস এর চলাচল বন্ধ করে দেয়।
যার ফলে এটি আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ জনিত ব্যাকটেরিয়া গুলোকে ধ্বংস করে দেয়।
ডক্সিক্যাপ ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম
এতক্ষণ ধরে আপনারা ডক্সিক্যাপ ক্যাপসুলটি কি কাজ করে এবং এটি কিসের ওষুধ সে সম্পর্কে জানতে পারলেন। এখন আমরা এই, ওষুধটি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানব। যেহেতু এই ওষুধটি বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ এর চিকিৎসায় কাজ করে থাকে।
সেহেতু এই ঔষধটি এক এক রোগের জন্য একেক মাত্রায় সেবন করতে হবে। নিচে এই ওষুধটি খাওয়ার সঠিক ডোজ ও নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করা হলো:
- সাধারণ সংক্রমণের ক্ষেত্রে এই ওষুধটি প্রথম দিন ২০০ মিলিগ্রাম করে সেবন করতে হবে। এরপরে ৭-১০ দিনের জন্য প্রতিদিন ১০০ মিলিগ্রাম করে সেবন করতে হবে।
- গুরুতর সংক্রমনের ক্ষেত্রে ১০ দিন ব্যাপী প্রতিদিন ২০০ মিলিগ্রাম করে সেবন করতে হবে।
- যাদের ব্রণ এর সমস্যা আছে তাদের জন্য প্রতিদিন ১০০ মিলিগ্রাম করে সেবন করতে হবে।
- তাছাড়াও যাদের অজটিল জেনিটাল ক্ল্যামিডিয়া, নন-গোনোকোকাকাল ইউরেথ্রাইটিস এর সমস্যা রয়েছে তারা ৭-২১ দিনের জন্য প্রতিদিন দুইবার ১০০ মিলিগ্রাম করে সেবন করতে হবে।
- এই ঔষধটি খাওয়ার পরে অবশ্যই যথেষ্ট পরিমাণে পানি পান করতে হবে।
ডক্সিক্যাপ এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
এই পৃথিবীতে এমন কোন ঔষধ নেই যার কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই। প্রতিটি ঔষধের কিছু না কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। তবে পার্থক্য শুধু এতোটুকুই যে কিছু ঔষধে কম এবং কিছু ওষুধে বেশি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়ে থাকে। ডক্সিক্যাপ ক্যাপসুলটিও এর বাইরে নয়।
আমাদের বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ থেকে বাঁচতে সাহায্য করে থাকে ঠিকই। কিন্তু এই ওষুধটি খাওয়ার ফলে এর কিছু সাধারণ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়ে থাকে। তবে সেগুলো মৃদু সময়ের জন্য দেখা দিয়ে থাকে। সে সকল পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলোঃ
- বমি বমি ভাব
- বমি
- ডায়রিয়া
- ত্বকে ফুসকুড়ি
- হেমােলাইটিক এনেমিয়া
- ইউসিনােফিলিয়া
উপরের উক্ত পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলো এই ওষুধটি সেবন করলে দেখা দিয়ে থাকে। তবে আপনারা যখন এর চিকিৎসা নেওয়া বন্ধ করে দিবেন তখন আবার এইগুলো দূর হয়ে যাবে।
ডক্সিক্যাপ কি অ্যান্টিবায়োটিক
ডক্সিক্যাপ কি অ্যান্টিবায়োটিক? এই সম্পর্কে আপনারা জানতে চেয়েছেন। তাহলে চলুন এবার সেই সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। হ্যাঁ, ডক্সিক্যাপ হচ্ছে এক ধরনের এন্টিবায়োটিক যার প্রধান উপাদান হলো ডক্সিসাইক্লিন হাইড্রোক্লোরাইড।
আর এটি টেট্রাসাইক্লিন গ্রুপের একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন এন্টিবায়োটিক। যা আমাদের শরীরে ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করে এবং বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায়তা করে থাকে।
ডক্সিক্যাপ ব্যবহারে সতর্কতা
প্রত্যেকটি ঔষধ গ্রহণের ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। তা না হলে এটি অজান্তে আমাদের উপকারের বদলে ক্ষতি হয়ে থাকে। ডক্সিক্যাপ ক্যাপসুলটিও সেবনে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। আর সেগুলো হলোঃ
- গর্ভবতী মহিলাদের এই ওষুধটি এড়ানো উচিত। তানাহলে এটি ভ্রুনের হাড়ের বৃদ্ধিতে ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
- আট বছরের কম বয়সি শিশুদের এই ঔষধটি ব্যবহার করা উচিত নয়। কারণ দাঁতের গঠনের সময় টেট্রাসাইক্লিন এর ব্যবহার শিশুদের স্থায়ীভাবে দাঁতের রং পরিবর্তন করতে পারে।
- এছাড়াও দীর্ঘদিন ব্যবহার করতে চাইলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ব্যবহার করা উচিত।
- লেখক এর মন্তব্য
প্রিয় বন্ধুরা, আশা করি আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনারা ডক্সিক্যাপ এর কাজ কি, কিসের ঔষধ, খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এবং বুঝতে পেরেছেন। এছাড়াও আমরা আপনাদের সুবিধার্থে আজকের এই আর্টিকেলে ডক্সিক্যাপ ক্যাপসুলের আরো বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে তুলে ধরেছি।
যেগুলো আপনাদের ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। আর এই ধরনের আরো নিত্যনতুন আর্টিকেল পড়ার জন্য আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদের সাপোর্ট করুন। এতক্ষণ ধরে আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাদের জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url