মেরিনক্যাল ডিএক্স কিসের ঔষধ, খাওয়ার নিয়ম এবং এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।
মেরিনক্যাল ডিএক্স কিসের ঔষধ, খাওয়ার নিয়ম এবং এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে আজকে আর্টিকেল আমরা আলোচনা করব। আপনারা হয়তো এই বিষয়ে বিভিন্ন জায়গায় এবং বিভিন্ন ওয়েবসাইট খুঁজে দেখেছেন কিন্তু নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্য পাচ্ছেন না।
তাহলে চিন্তার কোন কারণ নেই আজকের এই আর্টিকেলে আমরা উক্ত বিষয় সহ আরো বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। এই জন্য আপনারা আজকের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার চেষ্টা করুন।
মেরিনক্যাল ডিএক্স এর দাম কত
মেরিনক্যাল ডিএক্স এর দাম কত? এ সম্পর্কে আপনারা জানতে চেয়েছেন। নিচে এই সম্পর্কে তুলে ধরা হলোঃ
- প্রতিটি ঔষধের দাম: 16.00 টাকা
- প্রতিটি পাতার দাম (প্রতিটি পাতায় দশটি করে ঔষধ রয়েছে): 160.00 টাকা
- প্রতিটি বক্সের দাম: 640.00 টাকা
মেরিনক্যাল ডিএক্স কিসের ঔষধ
মেরিনক্যাল ডিএক্স ওষুধটি হলো ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড দ্বারা তৈরিকৃত একটি ঔষধ। এই ওষুধটি মূলত কোরাল ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি৩ এই দুইটি উপাদান দিয়ে তৈরি। এই ঔষধটি নিম্নলিখিত উপসর্গের জন্য ব্যবহৃত হয়ে থাকে। সেগুলো হলোঃ
- এটি অস্টিওপোরোসিস অর্থাৎ হাড়ের ক্ষয় প্রতিরোধ ও চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।
- এটি বৃদ্ধ বয়সের হাড়ের দুর্বলতা বা অস্টিওমালাসিয়া প্রতিরোধে কাজ করে।
- আমাদের দীর্ঘা পেশী ক্রিয়ার ফলে অনেক সময় আমাদের শক্তিশালী এবং বেদনাদায়ক বেশি সমূহের সংকোচন ঘটে যাকে টিটানি বলা হয়। এটি সেই টিটানির ব্যথা উপশমায় কাজ করে।
- এটি আমাদের হাইপারথাইরয়েডিজমের লক্ষণ যেমন হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া, দ্রুত হৃদস্পন্দন, ঘাড় ফুলে যাওয়া, চোখ লাল হাওয়া এবং ফুলে যাওয়ার চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
- অষ্টিওজেনেসিস জনিত রোগ যা আমাদের হাড়কে প্রভাবিত করে এবং হাড়কে দুর্বল করে দেয় এটি তা প্রতিরোধে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
- এছাড়াও এটি গর্ভাবস্থায় ও স্তন্যদান কারি নারীদের ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ করে এবং শিশু ও কিশোরদের দ্রুত বৃদ্ধিতে সহযোগিতা করে।
- এই ঔষধটি প্যানক্রিয়াটাইটিস, তীব্র কিডনী অক্ষমতায় ফসফেট বাইন্ডার হিসাবেও কাজ করে থাকে।
মেরিনক্যাল ডিএক্স এর কাজ
মেরিনক্যাল ডিএক্স ওষুধটি ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি৩ প্রিপারেশনে রয়েছে যেখানে ক্যালসিয়াম কার্বনেট কে কোরাল উৎস থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। আর এই কোরাল থেকে সংগৃহীত ক্যালসিয়াম কার্বনেট এর রাসায়নিক গঠন মানুষের হাড়ের উপাদানের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।
কোরাল ক্যালসিয়াম শরীরের হাড় ও দাঁতের গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। অপরদিকে ভিটামিন ডি৩ পরিপাকতন্ত্রে ক্যালসিয়ামের শোষণে সহায়তা করে এবং শরীরে ক্যালসিয়ামের ভারসাম্য রক্ষা করতে সহযোগিতা করে। সেই সাথে এটি হাড়ের বৃদ্ধিতে এবং অষ্টিওপরোসিস সংক্রান্ত জটিলতা দূর করে।
মেরিনক্যাল ডিএক্স খাওয়ার নিয়ম
মেরিনক্যাল ডিএক্স খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আপনারা জানতে চেয়েছেন। এই ঔষধটি আমাদের বিভিন্ন ধরনের রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এই জন্য এই ওষুধটি খাওয়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কেও জেনে থাকা আমাদের সকলের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ।
নিচে মেরিনক্যাল ডিএক্স খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হলোঃ
- চিকিৎসকরা সাধারণত এই ট্যাবলেটটি আপনার সমস্যা ও রোগের ধারণা অনুযায়ী দিনে ১-২ বার খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
- এই ট্যাবলেট টি খাওয়ার পর প্রচুর পরিমাণে পানি পান করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা।
- এই ওষুধটি খাওয়ার পরে সেবন করা ভালো এর ফলে এটি সহজে শোষণ হয়।
- এছাড়াও আপনার রোগ এবং সমস্যা ধারণা অনুযায়ী চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এটি খাওয়ার চেষ্টা করুন।
মেরিনক্যাল ডিএক্স এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
এই পৃথিবীতে এমন কোন ঔষধ নাই যার কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই। প্রত্যেকটি ঔষদেরই কিছু না কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। তবে পার্থক্য শুধু এতোটুকুই দেখা যায় যে, কিছু ঔষধে বেশি এবং কিছু ঔষধে কম পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। মেরিনক্যাল ডিএক্স ঔষধ টিও এর বাইরে নয়।
মেরিনক্যাল ডিএক্স ওষুধটি আমাদের বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকে বাঁচতে সাহায্য করে থাকে ঠিকই। কিন্তু এ ওষুধটি সেবনের ফলে আমাদের বেশ কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। আর সে সকল পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলোঃ
- পেট ফাঁপা
- বুক জ্বালা
- ডায়রিয়া
- কোষ্ঠকাঠিন্য
- মাথাব্যথা
- বমি বমি
- ক্ষুধামন্দা
এ সকল সাধারণ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ছাড়াও যদি এই ওষুধটি দীর্ঘদিন ব্যবহার করা হয়ে থাকে তাহলে অনেকের হাইপারক্যালসেমিয়ার মত সমস্যা দেখা দিতে পারে। এজন্য দীর্ঘদিন ব্যবহারের ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
মেরিনক্যাল ডিএক্স কি গর্ভাবস্থায় খাওয়া যায়
গর্ভবতী অবস্থায় একজন নারী দৈনিক ১৫০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম এবং ৬০০ আইইউ cholecalciferol এর বেশি গ্রহণ করা উচিত নয়। তবে মেরিনক্যাল ডিএক্স ওষুধটি প্রাণীদের ওপর গবেষণা করে দেখা গেছে যে, এর মধ্যে থাকা ভিটামিন ডি উচ্চমাত্রায় প্রজনন বিষাক্ততা দেখা গেছে।
এজন্য গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে এই ঔষধটি অতিরিক্ত মাত্রায় গ্রহণ করা এড়ানো উচিত কারণ এর ফলে হাইপারক্যালসেমিয়া উন্নয়নশীল ভ্রূণের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। তবে গর্ভাবস্থায় ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি এর অভাব দেখা দিলে সেক্ষেত্রে এটি ব্যবহার করা যেতে পারে।
মেরিনক্যাল ডিএক্স ব্যবহারে সতর্কতা
যেকোন ঔষধ গ্রহণ করার পূর্বে অবশ্যই তার সতর্কতামূলক বিষয়গুলোর উপর বিশেষ গুরুত্ব দিতে হয়। তা না হলে অসতর্কতার সাথে ওষুধ গ্রহণের ফলে নানান ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। মেরিনক্যাল ডিএক্স ব্যবহারের ক্ষেত্রেও বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
এই ওষুধটি আমাদের নানান ধরনের রোগ থেকে বাঁচতে সাহায্য করে থাকে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই ঔষধটি সেবনে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। তাহলে চলুন এবার সে সকল সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
- যাদের মূত্রবর্ধক এবং ক্যালকুলাস গঠনের উচ্চ প্রবণতা রয়েছে এমন রোগীদের চিকিৎসার জন্য যাদের বয়স বেশি তাদের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
- যে সকল রোগীদের হাইপারক্যালসেমিয়া বা প্রতিবন্ধী রেনাল ফাংশনের লক্ষণ রয়েছে তাদের এই ওষুধটির ডোজ কমাতে হবে বা ঔষধ গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
- কিডনি রোগীদের জন্য এই ঔষধটি সতর্কতার সাথে ব্যবহার করা উচিত।
- এলিমেন্টাল ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি৩ ট্যাবলেট সারকোইডোসিসে আক্রান্ত রোগীদের এই ওষুধটি সতর্কতার সাথে সেবন করা উচিত।
- অস্টিওপোরোসিসে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে এই ওষুধটি সতর্কতার সাথে ব্যবহার করা উচিত।
লেখকের মন্তব্য
প্রিয় পাঠক, আশা করি আজকের আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনারা মেরিনক্যাল ডিএক্স কিসের ঔষধ, খাওয়ার নিয়ম এবং এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এবং বুঝতে পেরেছেন। এছাড়াও আমরা আজকের এই আর্টিকেলে আরো বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করেছি যেগুলো আপনাদের ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই আপনার বন্ধু বান্ধবদের সাথে শেয়ার করবেন।
এ ধরনের আরো মিথ্যা নতুন আর্টিকেল করতে চাইলে আমার এই ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ফলো করুন এবং আমাদের সাপোর্ট করুন। কারন আমরা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরনের নতুন নতুন ক্যাটাগরির বাংলা আর্টিকেল লিখে পাবলিশ করে থাকি।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url