সেভ করলে কি দাড়ি গজায় - কত বছর বয়সে দাড়ি গজায়।
সেভ করলে কি দাড়ি গজায় - কত বছর বয়সে দাড়ি গজায় এই সম্পর্কে আমরা আজকের আর্টিকেলে আলোচনা করব। ছেলেদের মূল সৌন্দর্য হচ্ছে তাদের মুখে থাকা দাড়ি। আর অনেকেই চাপ দাড়ি রাখতে চাই কিন্তু কি করলে আমাদের দাড়ি গজাবে সে সম্পর্কে অনেকেরই জানা নেই।
তাহলে এ সকল বিষয় সম্পর্কে জানতে আজকের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার চেষ্টা করুন। কারণ আমরা এখানে উক্ত বিষয় সহ আরো বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করব।
সেভ করলে কি দাড়ি গজায়
অনেকেই বলে থাকে যে বা আমরা অনেকের কাছেই শুনে থাকি যে সেভ করলে নাকি দাড়ি পরিপূর্ণভাবে ওঠে এবং ঘন হয়। তবে আসলেই কি সেভ করলে আমাদের দাড়ি গজায় বা ঘন হয়ে থাকে? তাহলে চলুন এই বিষয়ে সঠিক তথ্য বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।
শেভ করলে দাড়ি গজায় এই ধারণাটি সম্পূর্ণ একটি ভুল ধারণা। আর এই ধারণাটি আমাদের সবার মনে জন্মায় তার কারণ হচ্ছে সেভ করলে আমাদের দাড়ি কিছুটা মোটা দেখায় সেজন্য। আমরা যখন প্রথমে শেভ করি তখন আমাদের দাড়ি অনেক পাতলা হয়ে থাকে।
এরপর আমরা যখন সেভ করি তখন আমাদের দাড়ি মোটা দেখায়। তবে আমাদের দাড়ি গজানোর সাথে সেভ করার কোন সম্পর্ক নেই। কারণ দাড়ি গজানো একটি বংশগত বৈশিষ্ট্য এবং এটি হরমোন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে। সেভ করলে আমাদের দাড়ির গোঁড়া থেকে নতুন দাড়ি গজায়।
কিন্তু সেভ করার ফলে আমাদের নতুন দাড়ি গজায় বা আমাদের দ্বারের ঘনত্ব বৃদ্ধি হয় এ ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুল। এজন্য আমরা বলতে পারি যে দাড়ি গজানো বা নারীর ঘনত্ব বাড়ানোর জন্য আমাদের সেভ করার সাথে কোন সম্পর্ক নেই।
কত বছর বয়সে দাড়ি গজায়
আসলে ছেলেদের কত বছর বয়সে দাড়ি ওঠে বা বার হয় এ বিষয়টি সম্পর্কে এখনো সঠিক কোন তথ্য নেই। কারণ অনেকেই রয়েছে যারা নবম শ্রেণীতে থাকাকালীন অবস্থায় দাঁড়িয়ে উঠে। আবার অনেকেই একটু পর দাড়ি উঠতে দেখা যায়। আবার অনেকেই রয়েছে যাদের কলেজে ওঠার পর দাড়ি ওঠে।
আবার এমনও ছেলে রয়েছে যাদের কম বছর বয়সেই বা ক্লাস এইটে পড়ে তখন থেকেই মুখে দাড়ি দেখা যায়। আসলে দাড়ি ওঠার কোন নির্দিষ্ট বয়স সমানই। এটি নির্ভর করে একজন পুরুষের বয়সন্ধিকাল এবং হরমোন নিয়ন্ত্রণের ওপর।
তবে সাধারণত ছেলেদের ১৫-১৮ বছরের মধ্যে দাড়ি ওঠা শুরু হয়। আবার বয়সন্ধিকালের পুরুষ লোকের গড়ে হিসাব করে দেখা গেছে যে, ২১ বছর বয়স থেকে দাড়ি গজানো শুরু হয়ে থাকে। তবে কিছু কিছু মানুষের আগে বা পরেও দাড়ি উঠতে পারে।
দাড়ি না গজানোর কারণ
আমাদের মধ্যে এমন অনেক মানুষ রয়েছে যাদের পরিপূর্ণ বয়স হওয়ার পরেও তাদের মুখে দাড়ি ওঠেনা। আসলে দাড়ি না গজানোর পিছনে বিভিন্ন ধরনের কারণ থাকতে পারে। তবে পুরুষদের দাড়ি গজানোর জন্য তাদের হরমোন এবং জেনেটিক কারণ থাকতে পারে।
এছাড়াও আরও বিভিন্ন ধরনের কারণ রয়েছে যে সকল কারণে আমাদের পুরুষদের দাড়ি গজায় না। সে সকল কারণগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যায়। নিচে দাড়ি না গজানোর কিছু কারণ সম্পর্কে তুলে ধরা হলোঃ
- এরকম অনেক পরিবার রয়েছে যে পরিবারগুলোতে পুরুষদের দাড়ি কম এবং পাতলা হয়ে থাকে। আর এটি সাধারণত বংশগতির কারণে হয়ে থাকে। যার ফলে জেনেটিক বা বংশগত কারণে অনেক পুরুষদের মুখে দাড়ি কম বা পাতলা হয়ে থাকে।
- পুরুষদের দাড়ি গজানোর জন্য টেস্টোস্টেরন নামক একটি প্রধান হরমোন দায়ী। আর যে সকল মানুষদের শরীরে এই হরমোনের পরিমাণ কম থাকে বা এ হরমোনটি কম ক্ষরণ হয় তাদের মুখে দাড়ি কম থাকে।
- অনেক সময় বয়সের কারণে পুরুষদের দাড়ির বৃদ্ধির ক্ষেত্রে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। যার ফলে বয়সের সাথে সাথে চামড়া সহ শরীরের বিভিন্ন অংশের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, সেইসাথে গ্রোথও কমে যায়।
- এছাড়াও পুরুষদের শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টির অভাবেও দাড়ি গজানোর সমস্যা দেখা দিতে পারে। পুরুষদের জিঙ্ক, ভিটামিন ডি, বি-কমপ্লেক্স যুক্ত পুষ্টির অভাবের কারণে দাড়ি গজায় না।
- চর্মরোগ জনিত সমস্যা অ্যালোপেসিয়া এরিয়াটা যা স্পট টাক নামেও পরিচিত। এই রোগটি অনেক সময় পুরুষদের দাড়ির ফলিকগুলোতে আক্রমণ করে। যার ফলে আমাদের দাড়ির বৃদ্ধি হ্রাস পায়।
চাপ দাড়ি গজানোর উপায় কি
আমাদের মধ্যে অনেক পুরুষই রয়েছে যারা মুখে চাপ দাড়ি রাখতে চায়। আর পুরুষদের মুখের সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য চাপ দাড়ি অন্যতম এক নিদর্শন। তাছাড়াও পুরুষদের মুখে দাড়ি রাখা মুসলমানদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
এজন্য কি করে বা কিভাবে আমাদের ত্বকে চাপ দাড়ি গজানো যায়? এই সম্পর্কে অনেকেই জানতে চান। এজন্য আমরা আজকে আর্টিকেলে এই বিষয়ে আপনাদের বিস্তারিত তুলে ধরার চেষ্টা করব। নিচে চাপ দাড়ি গজানোর উপায় সম্পর্কে তুলে ধরা হলোঃ
- প্রথমত আমরা অনেকেই মনে করি যে ঘন ঘন দাড়ি সেভ করলে আমাদের দাড়ি ঘন হয়। এই ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুল এবং এর কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তিও নেই। এজন্য আপনারা ত্বকে চাপ দাড়ি গজানোর জন্য চার থেকে ছয় সপ্তাহ পরে দাড়ি কাটুন।
- ত্বকে চাপ দাড়ি গজাতে আপনারা আপনাদের ত্বকে আমলকি তেল ব্যবহার করুন। কারণ আমলকি তেলের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন সি যা আমাদের ত্বকে চাপ দাড়ি গজাতে সাহায্য। এজন্য আপনারা আমলকির তেল দিয়ে ত্বকে ১৫ থেকে ২০ মিনিট মতো ম্যাসাজ করুন। এরপরও আপনার ত্বক ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।।
- ত্বকে চাপ দাড়ি গজানোর জন্য আপনারা ক্লিনজার দিনে দুইবার ব্যবহার করুন। এর ফলে এটি আপনার ত্বককে পরিষ্কার রাখতে সহযোগিতা করবে পাশাপাশি আপনার দাড়িকে বৃদ্ধি করতেও সাহায্য করবে।
- আমাদের ত্বকের দ্রুত চাপ দাড়ি গজানোর জন্য অবশ্যই ভালো ঘুম অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য আপনারা গভীর রাত অব্দি না জেগে থেকে রীতিমতো ঘুমানোর চেষ্টা করুন। কারণ এর ফলে এমন কিছু ভিটামিন ও মিনারেল পাওয়া যায় যা আপনার মুখে দ্রুত দাড়ি গজাতে সাহায্য করবে।
- ত্বকের চাপ দাড়ি গজাতে বায়োটিনযুক্ত খাবার যেমন কাঠবাদাম, চিনেবাদাম, আখরোট, তিসি ইত্যাদি। প্রতিদিন এক মুঠ করে হলেও এ সকল খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। এটি আপনার মাথার চুল এবং দাড়ি গজাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
- এছাড়াও নিয়মিত প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। তাহলে দেখবেন আপনার মুখে দ্রুত দাড়ি গজাবে।
- এছাড়াও ত্বকে পেঁয়াজের রস লাগাতে পারেন, এটি আপনার ত্বকে চাপ দাড়ি গজাতে সাহায্য করবে।
কোন হরমোনের অভাবে দাড়ি গজায় না
সাধারণত পুরুষদের ত্বকে এন্ড্রোজেন নামক একটি হরমোন রয়েছে যাও মুখের দাড়ি এবং বুকের লোম গজানো এবং কণ্ঠস্বর ভারী করে তোলে। আর এই এন্ড্রোজেন নামক হরমোন ক্ষরণ না হলে পুরুষদের ত্বকে দাড়ি গজায় না। আর এটি সাধারণত শারীরিক সমস্যার কারণে হতে পারে।
পুরুষদের বয়সন্ধিকালে মুখমন্ডলের লোমকূপ ডিহাইড্রোটেস্টোস্টেরনের উদ্দীপনার কারণেই দাড়ি গজিয়ে থাকে। আর এই ডিহাইড্রোটেস্টোস্টেরন হরমোন টেস্টোস্টেরন হতে নিঃসৃত হয়, যার মাত্রা বিভিন্ন ঋতুতে বিভিন্ন রকম হয়। তবে গ্রীষ্মকালে আমাদের দাড়ি দ্রুত বাড়তে দেখা যায়।
আবার এই টেস্টোস্টেরন হরমোন সমস্যার কারণে অনেকের প্রকৃত বয়সও দাড়ি গজায় না। তবে অনেকেরই এটি পারিবারিক বা জন্মগত কারণে দাড়ি গজানো দেরি হতে পারে। তাই আমরা বলতে পারি যে, পুরুষের দাড়ি গজানোর জন্য টেস্টোস্টেরন এবং ডাইহাইড্রোটেস্টোস্টেরন নামক হরমোন দায়ী।
কি খেলে দাড়ি গজায়
দাড়ি হচ্ছে পুরুষের সৌন্দর্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আর বর্তমান সময়ে তরুণদের মধ্যে দাড়ি রাখার প্রবণতা বেড়ে উঠেছে। আবার অনেকেই যাদের দাড়ি পাতলা বা কম তারা তাদের দাড়ি ঘন এবং দাড়ি গজানোর জন্য বিভিন্ন উপায় খুঁজে বেড়াচ্ছেন।
আপনারা জেনে অবাক হবেন যে, এমন কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো খাওয়ার ফলে আপনাদের ত্বকের দাড়ি গজাবে এবং ঘন করতে সাহায্য করবে। তাহলে চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক কি খেলে আমাদের দাড়ি গজায় সেই সম্পর্কে নীচে আলোচনা করা হলোঃ
- আমাদের পুষ্টিকর খাবারের তালিকায় অন্যতম একটি খাবার হল পালং শাক। এই সবুজ শখের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, সি, ক্যালসিয়াম, আয়রন এবং ফলিক অ্যাসিড। এজন্য এ সকল উপাদান পালং শাকের মধ্যে থাকায় এটি গ্রহণ করার ফলে এটি আমাদের দাড়ির বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে।
- মাছের মধ্যে দাড়ি বৃদ্ধির জন্য অন্যতম একটি মাছ হচ্ছে সামুদ্রিক টুনা মাছ। নিয়মিত খাবারের তালিকায় এই মাছটি এটি যোগ করলে এটি আমাদের দাড়ির ঘনত্ব বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে। এছাড়াও এর মধ্যে রয়েছে ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং প্রোটিন যা আমাদের দাড়িকে চকচকে করবে এবং ত্বককে উজ্জ্বল করতে সাহায্য করবে।
- এছাড়াও আপনাদের দাড়ি গজানোর জন্য ভিটামিন বি৭ যুক্ত খাবার গ্রহণ করতে হবে। এটি দাড়ি গজানোর পাশাপাশি দাড়ি বৃদ্ধি করতেও সহযোগিতা করে।
- দাড়ি গজানো এবং দাড়ির ঘনত্ব বাড়ানোর জন্য আপনারা দারুচিনির পেস্টের সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে আপনাদের দাড়িতে লাগিয়ে নিন। এর ফলে এটি আপনার ত্বকের ছিদ্রগুলোকে খুলতে সাহায্য করবে যার ফলে দাড়ির বৃদ্ধি ভালো হবে।
- আপনারা আপনাদের দাড়ির স্বাস্থ্যকর বৃদ্ধির জন্য কুমড়োর বীজ শুকিয়ে সেটিকে কাঁচা বা ভেজা অবস্থায় খেতে পারেন। তাহলে এর মধ্যে থাকা জিংক ও খনিজ পদার্থ আপনার দাড়িকে লম্বা, ঘন ও সুন্দর করতে সাহায্য করবে।
- এছাড়াও আপনারা কলা, ওটস, বাদাম, গাজর ইত্যাদি খাবার খেতে পারেন। এসব খাবারগুলো আপনার দাড়ির গঠন ও স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহযোগিতা করবে।
লেখকের শেষ মন্তব্য
প্রিয় পাঠক, আশা করি আজকের আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনারা সেভ করলে কি দাড়ি গজায় - কত বছর বয়সে দাড়ি গজায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এবং বুঝতে পেরেছেন। এছাড়াও আমরা আজকের এই আর্টিকেলে আরো বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করেছি। যেগুলো আপনাদের ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন।
এই ধরনের আরো নিত্যনতুন আর্টিকেল পড়ার জন্য আমার এই ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ফলো করুন এবং আমাদের সাপোর্ট করুন। কারণ আমরা এখানে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন বিভিন্ন ক্যাটাগরির বাংলা আর্টিকেল লিখে পাবলিশ করে থাকি। এতক্ষণ ধরে আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাদের জানাই অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url